গঠিত হলো ‘রোহিঙ্গা সেল’
মিয়ানমারের রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ‘রোহিঙ্গা সেল’ গঠন করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অধীনে এ সেল গঠন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত গত ৫ সেপ্টেম্বরের আদেশটি রোববার প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সহিংসতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের ওপার হতে বাংলাদেশে ভূ-খণ্ডে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশের কারণে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলাসহ সন্নিহিত সীমান্তবর্তী এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধনের সুবিধার্থে রোহিঙ্গা সেল গঠন করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, পুশব্যাক সম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে সেল। সম্প্রতি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের শুমারি (বায়োমেট্রিকসহ) ও সর্বশেষ অগ্রগতি, সন্নিহিত সীমান্তবর্তী এলাকায় সর্বশেষ পরিস্থিতি, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করবে।
সেলের কার্যপরিধিতে আরও বলা হয়েছে, চিহ্নিত ও নির্ধারিত স্থানের মধ্যে রোহিঙ্গাদের অবস্থান সীমাবদ্ধ রাখা সম্পর্কিত গৃহীত সর্বশেষ ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গাদের আবাসন ও মানবিক সহায়তা দেওয়া সংক্রান্ত কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে সেলকে।
এছাড়া মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কিত অগ্রগতি, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশ অংশে বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সফর সম্পর্কিত তথ্যাদি এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্যাদিও রোহিঙ্গা সেল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে।
জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) মো. সামছুর রহমান সেলের প্রধান সমন্বয়ক এবং যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-২) মো. শফিকুর রহমান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সেলে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে থাকবেন উপসচিব (রাজনৈতিক-১) আবু হেনা মোস্তফা জামান। উপসচিব (রাজনৈতিক-২) মোহাম্মদ ফারুক-উজ-জামান প্রথম বিকল্প কর্মকর্তা ও উপসচিব (সীমান্ত-৩) মনির হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয় বিকল্প কর্মকর্তা হিসবে সেলে দায়িত্ব পালন করবেন।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনে কয়েকটি পুলিশ পোস্ট ও সেনাঘাঁটিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে মারা যান কয়েকশ রোহিঙ্গা।
এ অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এরইমধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিন লাখের কাছাকাছি রোহিঙ্গা। এই প্রেক্ষাপটে ‘রোহিঙ্গা সেল’ গঠন করলো বাংলাদেশ সরকার।
আরএমএম/এসআর/আইআই