নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য দায়ী বিচারহীনতার সংস্কৃতি
দেশে নারীর প্রতি যৌন সহিংসতাসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের ঘটনার জন্য মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতিই দায়ী। নারীর প্রতি সহিংস ঘটনা প্রতিরোধে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের এগিয়ে না আসাও এর অন্যতম কারণ।
এছাড়া ইন্টারনেটের প্রভাব, নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা ও সামাজিক মূল্যবোধের অভাবের কারণে নারীর প্রতি সহিংস ঘটনা ঘটছে।
শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘পৌরুষ: নতুন ভাবনা-গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ মতামত তুলে ধরেন। ব্র্যাক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান ইশতিয়াক রেজা, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, ডিবিসি টিভির সম্পাদক নবনীতা চৌধুরী, অনলাইন পোর্টাল উইমেন চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধর, প্রথম আলোর সাংবাদিক তৌহিদা শিরোপা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের স্ট্রাটেজি, কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী রিফাত রশিদ মিথিলা, ইরেশ যাকের, ব্লগার ও অধিকারকর্মী আরিফ জেবতিক, ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ প্রমুখ। এতে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪.কম।
আসিফ সালেহ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রূপার ওপর যৌন নির্যাতন ও তাকে হত্যার ঘটনা আমাদের সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এতে বোঝা যায় নারীর প্রতি সহিংসতা কতটা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এ ধরনের সহিংসতা রোধে পুরুষদের ভূমিকা মুখ্য। এই প্রেক্ষাপটে নারী নির্যাতন রোধে কীভাবে একটা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা যায় এবং এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি তা তুলে ধরতেই এ সভার আয়োজন।
ইশতিয়াক রেজা বলেন, গণমাধ্যমেও দেখা যায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পোশাক বা স্বভাব এমনভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, যেন ধর্ষকের পক্ষেই ওকালতি করা হচ্ছে। এই ঘরানার সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
নবনীতা চৌধুরী বলেন, এই ক্ষেত্রে আমাদের মূল সমস্যা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। এজন্য ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পুরুষের ভাবনা পাল্টানোর পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
ইরেশ যাকের বলেন, নারী নির্যাতন রোধে আমাদের স্কুল পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। নারীদের উত্থান হলে পুরুষদের অনেকের মনেই ভীতিবোধ কাজ করে। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হলে আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করে কাজ করতে হবে।
আরিফ জেবতিক বলেন, সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় বর্তমানে গণধর্ষণ একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। আবার অনেকে এই অপকর্মটাকেই বীরত্ব মনে করে। তাই পুরুষদের এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ ২০১৬ ও ২০১৭ সালের তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, ২০১৬ সালে যেখানে আমাদের কাছে গড়ে প্রতি মাসে প্রতি জেলা থেকে ১০-১২টি যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য নারী নির্যাতনের তথ্য আসত, এখন সেখানে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত গড়ে ১৬-১৭টি তথ্য আসছে। এটা সত্যিই উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ।
এমএ/ওআর/জেআইএম
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ সপ্তাহে, ক্যাডার-ননক্যাডারে পদ ৩৭০১
- ২ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, ওষুধে ব্যয় ২০ শতাংশ
- ৩ জাপান গার্ডেন সিটিতে বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার অভিযোগে থানায় জিডি
- ৪ ‘রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ যেন হারিয়ে না যায়’
- ৫ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক