‘গোসলে গিয়ে রক্তে গোসল করলেন শাশুড়ি’
‘বৃদ্ধ শাশুড়ি।তাকে হত্যা করবে না বলে সাহস করে বাড়িতে গিয়েছিল গোসল করতে। গোসল গিয়ে রক্তে গোসল করলেন শাশুড়ি। নিজের বাড়ির কাছে কখন বোমা (ল্যান্ডমাইন)পুতে রেখেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী টের পাইনি। সেই বোমাতেই দুই পা হারালেন আমার মায়ের মতো শাশুড়ি। সেদিনের ঘটনা বলতে পারি না। কষ্টে বুক ফেটে যায়।’
এ কান্না রোহিঙ্গা নারী খলিমা বেগমের। খলিমার বয়স ২০ ছুঁইছুঁই। বিয়ে হয়েছে গেল বছর। বান্দরবানের তুমব্রু গ্রামের সীমানা ঘেঁষে মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট গ্রাম। আদি পুরুষেরা ও গ্রামেই পত্তন গড়েছিল বলে জানালেন তিনি। গেল ২৫ আগস্ট গোলাগুলির পর ঈদের আগেই বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশ সীমানায় আশ্রয় নেন তার পরিবার।
শুক্রবার বিকেলে তমব্রু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় খলিমার সঙ্গে। হাত উঁচিয়ে নিজ বাড়ি দেখিয়ে বলেন, বড় সংসার আমাদের। বাড়ি ছেড়ে আসতে মন চায়নি। কয়েক একর জমিতে ধান চাষ করেছি। প্রাণ বাঁচাতেই এপারে আসি।
ছেলের বউ খলিমা
শাশুড়ির আহত হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ক্যাম্পে গোসলের কোনো ব্যবস্থা নেই। কয়েক দিন গোসল না করতে পারায় শাশুড়ি অস্থির হয়ে যান। ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে শাশুড়ি (সাবুকেন্নসা, ৭০ বছর) বাড়িতে যান গোসল করতে। গোসল সেরে সীমানার কাছে আসতেই বিকট শব্দ হয়। বোমায় (ল্যান্ডমাইন) এক পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে উড়ে যায়। আরেক পায়ের মাংসও ছিঁড়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ফেরত দিলে উখিয়ায় খ্রিস্টান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তাররা তার দু’পা-ই কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন।
সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নতুন করে বহু মাইন পুতে রাখছেন বলে জানালেন আরেক রোহিঙ্গা এনাম হোসেন। বলেন, দিন-রাত সারাক্ষণ এখন মাইন পুতে রাখা হচ্ছে সীমান্তে। মাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন বলে জানান তিনি।
এএসএস/এএইচ/জেএইচ/আইআই