ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে থাকছে না ছিটমহলবাসী

প্রকাশিত: ০৩:২৩ এএম, ০৯ জুন ২০১৫

ছিটমহলবাসীরা এখনই ভোটার হতে পারছেন না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে স্থলসীমান্ত চুক্তির দলিল বিনিময় হলেও ছিটমহলবাসীকে ভোটার করতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এখনও শুরুই হয়নি। এছাড়া ওইসব ছিটমহল কোন ইউনিয়ন, উপজেলা ও কোন নির্বাচনী এলাকার আওতাভুক্ত হবে, সেসব কিছুই এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।এসব কারণে রমজানের ঈদের পর শুরু হতে যাওয়া সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে ছিটমহল এলাকা আওতাভুক্ত করা হচ্ছে না।

তবে উল্লেখিত প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, বিশেষ কর্মসূচির আওতায় তাদের ভোটার করা হবে। ইসি ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে ছিটমহলবাসীদের (বাংলাদেশী) ভোটার তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবনা এসেছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে এ প্রস্তাব দিয়েছে। ছিটমহলবাসীকে ভোটার তালিকাভুক্ত করতে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণার কথাও প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এছাড়া একজন নির্বাচন কমিশনার ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে নোট দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষ করার পরই ছিটমটলবাসীকে ভোটার করার বিষয়টি চিন্তা করছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ছিটমহলবাসীদের ভোটার তালিকাভুক্ত করতে কিছু প্রশাসনিক সমস্যা রয়েছে। ছিটমহলে বসবাসকারীদের মধ্যে সবাই বাংলাদেশী নাগরিক হতে চান কি না- এখনও তা নির্ধারিত হয়নি। এছাড়া জাতীয় সংসদের এলাকা হিসেবে ভোটার করা হয়। ছিটমহলগুলোকে সংসদীয় আসনের আওতায় এনে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করার পর ছিটমহলবাসীদের ভোটার করা যেতে পারে।

ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ছিটমহলবাসীদের ভোটার করার আগে ওই এলাকার ছিটমহলগুলোর ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলার আওতায় এনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এরপর নির্বাচন কমিশন ওই সব এলাকার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করার পরই ছিটমহলবাসীকে ভোটার করা হবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে এ বছর চলে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ।

তারা জানান, এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, গত ১৫ মে (২০১৪ সাল) সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জনবসতি আছে এমন বাংলাদেশী ছিটমহলগুলোতে ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে নির্বাচন কমিশন ছিটমহলগুলোতে তথ্য সংগ্রহ ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায় ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিটমহলগুলোর হস্তান্তরের বিষয়ে মতামত এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়- সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়।

ওই চিঠির জবাবে মন্ত্রণালয় দুটি জানায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত বিষয়টি বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় এবং চলমান বিষয়ের মধ্যে সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে। বিরোধ নিষ্পত্তি হলে দুই দেশের ছিটমহল বিনিময় হবে। তাই ছিটমহল নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করার জন্য মতামত দেয়া হয়।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দিন বলেন, ছিটমহলবাসীকে ভোটার তালিকাভুক্ত করার আগে প্রশাসনিক কার্যক্রমগুলো শেষ করতে হবে। এসব কাজ শেষ করতে এ বছর পুরোটাই লেগে যেতে পারে। কমিশনের সিদ্ধান্ত পেলে ছিটমহলবাসীদের ভোটার করতে স্পেশাল প্রোগ্রাম (বিশেষ ব্যবস্থা) হাতে নেয়া হবে।

এএইচ/এমএস