ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

হাসপাতালে ঈদ, আক্ষেপ নেই মুক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

‘ঈদে বাসায় যেতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু এখন আর ইচ্ছা নাই। হাত সেরে গেলে বাসায় কতই না ঈদ করতে পারব! হাসপাতালে হাতটা সারিয়ে বাড়িতে গেলে অসুবিধা কী?’

বুধবার হাসপাতালের বেডে শুয়ে এভাবেই ঈদুল আজহা উদযাপন নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা জাগো নিউজ’র কাছে ব্যক্ত করেন বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার স্কুলছাত্রী মুক্তামণি।

আগামী ২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ছোট-বড় সবাই যখন ঈদের জন্য উন্মুখ, তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের কেবিনের বেডে শুয়ে ঈদের জন্য দিন গুণছে মুক্তা।

jagonews24

শুরুতে দু-একবার সাতক্ষীরার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করার কথা বললেও এখন হাতের চিকিৎসা করিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বদ্ধপরিকর মুক্তা। হাত না সেরে ওঠা পর্যন্ত বাড়ি যাবে না বলেও জানিয়েছে তার বাবা ইব্রাহীম হোসেনকে।

আলাপকালে মুক্তা জাগো নিউজকে বলে, ‘বাড়িতে জীবনে অনেক ঈদ করতে পারব। তাই এবার এখানেই থাকি। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

ঢামেকের কেবিনে মুক্তার সঙ্গে এবার ঈদ উদযাপন করবেন তার বাবা-মা, জমজ বোন, ছোট ভাই ও চাচা।

মুক্তার বাবা ইব্রাহীম হোসেন জানান, মুক্তা অনেক কিছুই বোঝে। হাসপাতালেই ঈদ করতে চায়। যতো কষ্টই হোক না কেন আমরা মুক্তার সম্পূর্ণ চিকিৎসা শেষ করে বাড়ি ফিরব।

মুক্তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি জানান, গতকাল জ্বর থাকায় অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেয়ার পরও অপারেশন হয়নি। আজ জ্বর একটু কমেছে। শরীর আগে থেকে ভালো। সব কিছু খেতে পারে। চিকিৎসকরা ঈদের পর অপারেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন।

jagonews24

কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, জ্বরের কারণে মুক্তার ওষুধপত্র পরিবর্তন করা হয়েছে। ঈদের পর মুক্তার চিকিৎসার বিষয়গুলো নিয়ে মেডিকেল বোর্ড বসবে। আগামী সোম অথবা মঙ্গলবার পরবর্তী অপারেশন করা হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল (মঙ্গলবার) মুক্তার দ্বিতীয় অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তবে জ্বর আসায় অপারেশন স্থগিত করা হয়। পরে মুক্তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।
মুক্তার জ্বর ভালো হলে ঈদের পর মেডিকেল বোর্ড বসে সবার মতামতের ভিত্তিতে বাকি অপারেশন করা হবে বলে জানালেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তার সংবাদটি প্রকাশিত হয়। পরে মুক্তাকে সরকারিভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তার চিকিৎসার যাবতীয় দায়ভার বহনের দায়িত্ব নেন। ঢামেকে ভর্তি করা হয় মুক্তাকে। মুক্তার চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ড গঠনসহ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।

অবশেষে গত ১২ আগস্ট প্রথম অপারেশন সম্পন্ন হয় মুক্তার। চিকিৎসকরা ওই অপারেশনকে ‘সফল’ বলে দাবি করেন।

এআর/এসআর/আরআইপি