লম্বা লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও মিলছে না বাসের কাঙ্ক্ষিত টিকিট
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে গাবতলীতে হানিফ পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে অপেক্ষা করে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় টিকিট হাতে পেয়েছেন রায়হান নামে এক যাত্রী।
নীলফামারীর এই যাত্রী পেয়েছেন ৩১ আগস্টের টিকিট। তবে তিনি চেয়েছিলেন ২৯ বা ৩০ তারিখের টিকিট।
কাঙ্ক্ষিত টিকিট না পাওয়ার কারণ হিসেবে কাউন্টার থেকে তাকে জানানো হয়েছে, টিকিট ছাড়ায় ১ থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে
যায়। এত লম্বা সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট হাতে না পেয়ে হতাশই হয়েছেন তিনি।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ঈদ সামনে রেখে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর সবচেয়ে বড় বাস টার্মিনাল গাবতলীর হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে কথা হয় মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত রায়হানের সঙ্গে।
রায়হানের মতো আরও অনেকেই পাননি কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট। তবে এখনও বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে- এমন অভিযোগ কেউ করেননি।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে অগ্রিম টিকিট বিক্রি। প্রতিবছরের মতো এবারও এই টিকিট পেতে রয়েছে দীর্ঘ লাইন। সরেজমিনে দেখা গেছে ৩০ ও ৩১ আগস্টের টিকিটের চাহিদাই বেশি।
বাস-মালিকদের আশঙ্কা ছিল কম ছুটি ও বৃষ্টির কারণে এবারে যাত্রী সংখ্যা কম হতে পারে। তবে টিকিট কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়ে দৃশ্যত হারিয়ে গেছে সে শঙ্কা।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ছাড়াও কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, শ্যামলী, কলেজ গেটসহ বিভিন্ন স্থানের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
এ সব এলাকায় হানিফ এন্টারপ্রাইজ ছাড়াও সোহাগ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল পরিবহন, এসআর ট্রাভেলস কাউন্টারের সামনে ছিল যাত্রীদের ভিড়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে ৩০ ও ৩১ আগস্ট। এই দুই দিন সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। আবার কেউ কেউ ৩১ আগস্ট অফিস করেই ঢাকা ছাড়বেন।
তবে সড়কের বেহাল দশা কপাল ভাঁজ ফেলছে অনেকেরই। কেননা ঈদের আগেই বিভিন্ন স্থানে বাস সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় রাস্তায় থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রেনে যাত্রীদের বেশি ভিড় থাকবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
সৈয়দপুরের টিকিট কিনতে আসা আবির নামে এক যাত্রীর অভিযোগ টিকিট থাকার পরও দেয়া হচ্ছে না। কথা হলে তিনি বলেন, ‘৩০ তারিখের টিকিট চাইলাম, পেলাম না। বাধ্য হয়ে নিয়েছি ৩১ তারিখের।’
জাগে নিউজকে তিনি বলেন, আমি লাইনে দাঁড়িয়েছি রাত ৩টায়। আমার আগে খুব বেশি মানুষ ছিলেন না। তারপরও বলছে টিকিট নাই। শুধু কী তাই? ৩১ তারিখ কখন যেতে চাই কিছুই বলে না, দিয়ে দিল।
প্রতিবছর দুই ঈদে একসঙ্গে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান জীবিকার তাড়নায় ঢাকায় পড়ে থাকা লাখো মানুষ। আর একসঙ্গে এত মানুষের যাওয়ার সুযোগটাই লুফে নেন কালোবাজারিরা। প্রথমে টিকিট নেই জানিয়ে পরে বেশি দামে বিক্রি করা হয় টিকিট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সামাদ বলেন, ‘এবার আমরা ২ সেপ্টেম্বরকে ঈদ ধরে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করেছি। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চাপ রয়েছে ৩০ ও ৩১ আগস্ট। এই দুই দিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বেন বলে মনে করা হচ্ছে। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস হচ্ছে ৩১ আগস্ট।’
কেউ কেউ এই দিন ছুটি নিয়ে এক দিন আগেই অর্থাৎ ৩০ আগস্ট ঢাকা ছেড়ে যাবেন। কেউ কেউ ৩১ আগস্ট অফিস করেই ঢাকা ছাড়বেন। তাই এই দুই দিন সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে।
চাহিদা মতো টিকিট দেয়া হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, দাম বেশি রাখা হচ্ছে না।
এমএ/এনএফ/আইআই