ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান সিদ্দিকুর
ব্রেইল পদ্ধতিতে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান শাহবাগে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত সিদ্দিকুর রহমান। অন্যের বোঝা না হয়ে মনের আলো দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান তিনি।
রোববার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আলাপকালে এমন ইচ্ছার কথা জানান সিদ্দিকুর।
সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ চোখের আলো কেড়ে নিলেও আমার মনের আলো নিভে যায়নি। মনের আলো জ্বালিয়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ালেখা চালিয়ে যাব।’
সরকারিভাবে পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ছেলেবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছি বড় হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করব। আমার মনের সে ইচ্ছা মুছে যায়নি। তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। বড় ভাই দিনমজুরের কাজ করে আমার পড়ালেখার খরচ বহন করত। তাই পরিবার ও দেশের মানুষের কল্যাণে আমি কাজ করতে চাই।’
ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে গত ১৯ জুলাই উত্তরার একটি ইংরেজি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। ২০ জুলাই রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে মানববন্ধন পালন করবে তাই ২১ জুলাই থেকে তার ক্লাস করার কথা ছিল। কিন্তু মানববন্ধনে চোখের আলো হারিয়ে তা অনিশ্চিত হয়ে যায়।
সিদ্দিকুর বলেন, ‘২০ জুলাই মানববন্ধন শেষে আমরা ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। পুলিশ আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে যায়। পুলিশ আমাদের দিকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। আর তখন আমার চোখের মধ্যে প্রচণ্ড আঘাত অনুভব করি। তখন থেকেই আমি আর দেখতে পাই না।’
সিদ্দিকুরের চিকিৎসক ড. জাহিদ হাসান মেনন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সিদ্দিকুরের চোখের আলো ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বর্তমানে সিদ্দিকুরের চোখের আঘাতের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চোখের ক্ষত স্বাভাবিক হলে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হতে পারে।
সিদ্দিকুরের মা সুলেখা খাতুন জানান, অনেক কষ্টে সিদ্দিকুরকে বড় করেছেন। তার বড় ভাই অর্ধাহারে-অনাহারে পড়ালেখার খরচ চালিয়েছে। সিদ্দিকুরের চোখের আলো হারিয়ে যাওয়ায় এখন তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাদের বেঁচে থাকার আর কোনো অবলম্বন নেই। সরকারকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
এমএইচএম/বিএ/আরআইপি