কারও বোঝা হয়ে থাকতে চান না সিদ্দিকুর
‘আমি আর কখনও পৃথিবীর আলো দেখতে পারব না। অন্ধ হয়ে আমি সবার বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। আমার এ জীবনের মূল্য কী রইল?’ এমন প্রশ্ন তুলে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন শাহবাগে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত সিদ্দিকুর রহমান।
শনিবার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে এখন পৃথিবীর সবকিছুই শুধু অন্ধকার। আমি বুঝতে পারি, কেউ আমার চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে পারবে না। চিকিৎসকরা শুধু আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। আমি চিরদিনের জন্য চোখের আলো হারিয়ে ফেলেছি। কী অপরাধ করেছিলাম? পুলিশ কেন আমার চোখের আলো কেড়ে নিল? কেনইবা আমার পরিবারকে পথে বসাল?’ এসব অভিযোগ করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সিদ্দিকুর রহমান।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক শ্যামল কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে চেন্নাই থেকে ফেরার পর পুনরায় সিদ্দিকুরকে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের বোর্ড তার চিকিৎসা শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ শনিবার চেন্নাইয়ের চিকিৎসকদের রিপোর্ট দেখা হয়েছে। সিদ্দিকুরের রেটিনা ও কনিকা নষ্ট হয়ে গেছে বলে সেসব রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।’
সিদ্দিকুরের চোখে কনিকা প্রতিস্থাপন সম্ভব নয় উল্লেখ করে এ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘প্রথমদিকে সিদ্দিকুরের চোখে আলো দিলে কিছুটা অনুভব করতে পারতেন। বর্তমানে সেটিও পারছেন না। সে কারণে তার চোখের আলো ফিরে আনার ব্যাপারে চিকিৎসকরা অনেকটা হতাশ।’ সিদ্দিকুরের চোখের আলো ফিরিয়ে আনতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
সিদ্দিকুরের স্বজনরা জানান, সিদ্দিকুর আর দেখতে পারবে না। প্রতিদিন চিকিৎসকরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কেউ তার চোখের আলো ফিরে পাবার আশা দিতে পারছেন না।
চোখের আলো ফিরে না এলেও সিদ্দিকুর যেন কারও বোঝা না হয় সরকারের কাছে সে দাবি জানান তার স্বজনরা।
এমএইচএম/বিএ/আরআইপি