ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:২৭ পিএম, ১০ আগস্ট ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়নের গতিধারা ধরে রাখতে হলে সরকারে ধারাবাহিকতাও ধরে রাখতে হবে। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছি, ঠিকই আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণের যে আস্থা ও বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে এখন উন্নয়ন রোল মডেল। বিশ্বের মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করে আমাদের উন্নয়ন দেখে।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত দলের যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। জাতির পিতার নাম-নিশানা মুছে ফেলার ঘৃণ্য চক্রান্ত হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো, আমাদের দেশের কয়েকটা প্রজন্মকে এই বিভ্রান্তির বেড়াজালে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসকে কেউ কোনো দিন মুছে ফেলতে পারেনি। সত্য প্রকাশ হবেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে। আবার কেউ কেউ এক ধাপ উপরে গিয়ে .. কারও একক চেষ্টায় স্বাধীনতা আসেনি। হ্যাঁ একক চেষ্টায় কোনো কিছুই হয়নি। কিন্তু সবকিছুর পেছনে কারও ত্যাগ থাকে, প্রেরণা থাকে, সাংগঠনিক ক্ষমতা থাকে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার শক্তি থাকে। সেই শক্তি ছিল জাতির পিতার।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যদি এত জীবনে এত ত্যাগ স্বীকার না করতেন। .. যে জাতির ৮০ ভাগের মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করত। এই দেশের মানুষের জীর্ণশীর্ণ শরীর, বিদেশে থেকে কাপড় এনে পরতে হত। এই রকম একটা পরিবেশ, এই রকম একটা জাতিকে স্বাধীনতাকে চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন জাতির পিতা।

তিনি বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানের শাসক ইয়াহিয়া খান গ্রেফতার করে জাতির পিতাকে। শুধু তাই না ২৬ মার্চ ইয়াহিয়া যে ভাষণ দিয়েছিল সেখানে বঙ্গবন্ধুর কথাই বলেছিল, তাকে পাকিস্তানের শত্রু হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল এবং তার বিচার সে করবে এই ঘোষণাও সে দিয়েছিল। ইয়াহিয়া তার ঘোষণায় আর কারও নাম বলেনি। স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়াটাই ছিল জাতির পিতার বড় অন্যায়। সেই অপরাধে ইয়াহিয়া অপরাধী করেছে জাতির পিতাকে। জিয়াউর রহমানও একজন মেজর ছিল। তাকে কি গ্রেফতার করেছে, তার কি চাকরি গিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তার বিচার করে ফাঁসির রায়ে সইও করেছিল ইয়াহিয়া। সে ইতিহাস মুছে দিয়ে, আরেকজনকে ঘোষক বানিয়ে .. ঘোষক কাকে বানানো হলো? জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে বেরিকেড দিচ্ছিল, ওই চট্টগ্রামে যারা বেরিকেড দিয়েছিল তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল, পাকিস্তানি শাসকদের পক্ষ হয়ে আন্দোলনরত এবং সংগ্রামরত মানুষকে হত্যা করেছিল জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বারবার প্রচার হচ্ছিল। আমাদের জহুর আহমেদ চৌধুরী (এই নামটাই মনে হয় বলেছে, রেকর্ড ক্লিয়ার না, কনফিউশন আছে।) চট্টগ্রামের নেতা তিনি বললেন- সেনাবাহিনীর কাউকে নিয়ে আসো। যেহেতু এটা যুদ্ধ, সেনাবাহিনীর কাউকে দিয়ে বলালে যেন যুদ্ধ-যুদ্ধ মনে হয়। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হচ্ছিল। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন হান্নান সাহেবসহ একে একে আমাদের অনেকে পাঠ করা শুরু করেন। ২৭ তারিখে জিয়াউর রহমান যখন সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানি শাসকদের জন্য অস্ত্র নামাতে যান তখন আমাদের যারা ভলান্টিয়ার তারা তাকে বেরিকেড দেয়, তারা তাকে আটকায়। পরবর্তীতে যেহেতু একজন সেনা অফিসার দরকার তাকে নিয়ে আসা হয় এবং তাকে দিয়ে ঘোষণা পাঠ করা হয়। কারও একক নেতৃত্বে স্বাধীনতা আসেনি। হ্যাঁ সবার সম্মিলিত চেষ্টায় কিন্তু একজন না একজনকে তো নেতৃত্বে থাকতে হয়। দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধ তার নেতৃত্ব জাতির পিতাই দিয়েছিলেন। এটাতে স্বীকার করতে পারবে না। এটাতো বাস্তব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু দেশে না এই সত্য এখন আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। এখন আর মানুষের কাছে বিকৃত ইতিহাস বিক্রি করা যায় না। তারপরও সুযোগ পেলে কেউ কেউ এই বিকৃত ইতিহাসকে সামনে আনার চেষ্টা করে। ১৫ আগস্টের কালো দিবস না যদি না আসত তবে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ হত।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্য বাঙালির যারাই এ জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে, যারাই এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে, যখনই মানুষ সুফল পেতে শুরু করে তখনই ষড়যন্ত্র আরও দানা বেঁধে ওঠে। তার মানে হচ্ছে সেই স্বাধীনতার বিরোধীরা, যারা মুক্তিযুদ্ধ চায়নি, যারা হত্যা-ধর্ষণ, লুটপাটের সঙ্গে জড়িত। তাদের প্রেতাত্মাগুলো বাংলাদেশে রয়ে গেছে। সুযোগ পেলেই তারা ছোবল মারার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে বাঙালি জাতিকে সর্তক থাকতে হবে এবং মানুষকে বুঝতে হবে কারা তাদের কল্যাণে কাজ করে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে উন্নয়ন হয়। জনগণের কল্যাণ হয়। আজকে উন্নয়নের যে গতিধারা তা যেন থেমে না যায় সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়নের ছোয়া, সুফল মানুষ পায়। আজকে তা মানুষ দেখেছে।

এফএইচএস/বিএ