আধুনিকায়ন হচ্ছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
দীর্ঘ মেয়াদী চাহিদাকে সামনে রেখে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দুটি ধাপে এই কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রথম ধাপে অন্যান্য অবকাঠামো এবং পরবর্তী ধাপে নির্মাণ করা হবে দ্বিতীয় রানওয়ে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, ক্রমবর্ধমান যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরিতে কোরিয়ার ইয়ুসহিন, সিঙ্গাপুরের সিপিজি ও বাংলাদেশের ডিডিসির সমন্বয়ে একটি যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই ও একটি নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে। এ মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, দুটি পর্যায়ে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হবে। প্রথম পর্যায়ে দ্বিতীয় রানওয়ে বাদে সব অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে তৃতীয় টার্মিনাল, কার্গো ভিলেজ, ভিভিআইপি কমপ্লেক্স ও অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল।
জানা গেছে, এ পর্যায়ের কাজ চলতি বছর শুরু হয়ে ২০১৯ সালে শেষ হবে। এতে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় রানওয়েসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ বাস্তবায়ন পুনর্মূল্যায়ন করা হতে পারে। সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে শাহজালালের সম্প্রসারণ অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিবেদনে যথাসম্ভব দ্রুত প্রথম পর্যায়ের কাজ বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে বেবিচক মনে করে, বিমানবন্দর সম্প্রসারণের প্রথম কাজ সম্পন্নের পাশাপাশি এখনই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ শুরু করা উচিত। ১৩ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, দ্বিতীয় রানওয়ে এবং অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন ও খসড়া মাস্টারপ্ল্যান উপস্থাপনা করা হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেয়া এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছর ৬৭ লাখ যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করেছে এবং যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ৫। বিমানবন্দরের বার্ষিক কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা দুই লাখ টন, বর্তমানে এ বিমানবন্দরের মধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার টন কার্গো পরিবহন করা হচ্ছে। অর্থাৎ বর্তমানে বিমানবন্দরের সক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ১৮ শতাংশ কার্গো হ্যান্ডলিং হচ্ছে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি এর মোট সক্ষমতার ৪০ শতাংশ ব্যবহার করছে। নতুন অবকাঠামো তৈরি হলে বাকি ৬০ শতাংশ ব্যবহার সম্ভব হবে।
এসকেডি/আরআই