ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘ভাইয়ের চোখের আলো ফিরাইয়া দেন’

মুরাদ হুসাইন | প্রকাশিত: ১১:০৭ পিএম, ২০ জুলাই ২০১৭

‘আমার এতিম ভাইটার চোখের আলো ফিরাইয়া দেন। অনেক কষ্ট কইরা ভাইটারে বড় করছি। আমার ভাই বই পইড়া বিসিএস ক্যাডার হইব। আমগো সবার কষ্ট দূর হইব।’

অশ্রুসজল কণ্ঠে হাসপাতালে এভাবে আর্তনাদ করছিলেন শাহবাগে আহত তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের বড় ভাই নায়েব আলী।

তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মেধাবী ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। পড়ছেন অনার্স তৃতীয় বর্ষে। বৃহস্পতিবার সহপাঠীদের সঙ্গে শাহবাগে এসেছিলেন পরীক্ষা সময় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবি জানাতে। আন্দোলনে যোগদিতে এসে চোখের আলো হারিয়ে এখন তিনি আগারগাঁওয়ে জাতীয় ও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বিছানায় আর্তনাদ করছেন। বর্তমানে সহপাঠীদের সহযোগিতায় তার চিকিৎসা চলছে।

পরিবারে ছোট সন্তান সিদ্দিক। ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। বড় ভাই নায়েব আলী দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের হাল ধরে রেখেছেন। তাই পরিবারের কারও পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। বিসিএস ক্যাডার হয়ে সংসারের দারিদ্র্যতা দূর করবে সে স্বপ্ন ছিল সিদ্দিক ও তার পরিবারের।

নায়েব আলী বলেন, ‘না খাইয়া ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ জোগাই। এহন তার চিকিৎসার টাকা কই পামু? আমগো সবার অনেক অনেক স্বপ্ন, সিদ্দিক একদিন অনেক বড় মানুষ হইয়া আমগো মুখ উজ্জ্বল করব। পুলিশ আমার ভাইটারে অন্ধ কইরা দিছে।’

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও চক্ষু ইনস্টিটিউট হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শ্যামল কুমার সরকার রোগীর পরিস্থিতি বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্দিকুর রহমানকে আনা হয়। এরপর আমরা তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আঘাত লেগে রোগীর চোখের মনি (বল) গলে গেছে। তার চোখের নিচের অংশেও বেশ আঘাত রয়েছে। ফলে চোখের চারপাশ অনেক ফুলে গেছে। এ কারণে রোগী চোখে দেখতে পারছে না। তবে সে ভবিষ্যতে চোখে দেখতে পারবে কি-না সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। শুক্রবার আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।’

উল্লেখ্য, নীতিমালা প্রণয়সহ সাত দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের। এ সময় আন্দোলনরত ১১ শিক্ষার্থীকে আটকও করেছে পুলিশ। দুই জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎরত রয়েছেন।

এমএইচএম/বিএ