নারী লাঞ্ছনা : প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের বক্তব্যে গড়মিল
পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্যে গড়মিল পেয়েছে সংসদীয় কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সি বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আইজিপি যে কথা বলেছেন তার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে “বেমিল” রয়েছে।
রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শামসুল হক টুকু, মো. ফরিদুল হক খান দুলাল, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফখরুল ইমাম, কামরুন নাহার চৌধুরী অংশ নেন।
এ সময় তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির একটি রিপোর্ট আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই রিপোর্টে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় পহেলা বৈশাখে যৌন নিপীড়ন এবং অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল না।
শাহবাগের যৌন নিপীড়ন ও অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডসহ সম্প্রতি কয়েকজন ব্লগার হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তাতে বলা আছে এসব হত্যাকাণ্ডের সময় পুলিশের দায়িত্বে কোনো গাফিলতি ছিলো না। তারপরও কমিটির পক্ষ থেকে আরো গভীর তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
এ সময় দশজন বিশিষ্ট নাগরিকে হত্যার হুমকি নিয়েও কমিটিতে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সভাপতি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে, যে দশজন ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে তারা কমবেশি সবার কাছেই পরিচিত। তাই তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে বলা হয়েছে। পুলিশকে বলা হয়েছে কোনো ঘটনা ঘটার আগেই তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নিরাপত্তা বাড়িয়ে লাভ কী?
আদিবাসী তরুণী ধর্ষণের বিষয়ে টিপু মুন্সি বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। এ জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে ।
এদিকে কমিটিতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মিডিয়াতে কথা বলার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পরেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা নানা মন্তব্য করেন। তাই মিডিয়াতে কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কমিটি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ৫০ হাজার পুলিশ কনষ্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার সুপারিশ করে। সেই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর যানবাহন সমস্যা সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা অবসানের পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে যানবাহন ক্রয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
এইচএস/এসকেডি/বিএ/আরআইপি