আজও ঢাকা ছাড়ছে মানুষ
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে আজও নাড়ির টানে রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ। এই চিত্র যেমন ছিল ঈদের আগের সপ্তাহ জুড়ে। তেমনি ঈদের পরের দিনও, রাজধানী থেকে দেশের সর্বত্র বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের যাত্রা পথে মানুষের সমাগম রয়েছে।
সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে উত্তরবঙ্গ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংগামী ট্রেন ছেড়ে গেছে নিজ নিজ গন্তব্যে। একই রকম চিত্র দেখা গেছে, রাজধানীর বাস টর্মিনালগুলোতে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা জামালপুরের মো. আসগর জাগো নিউজকে জানান, পুরান ঢাকায় এক মনিহারী দোকানে কাজ করি। কাস্টমারের চাপ থাকায় ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বেচাকেনা করতে হয়েছে, যার কারণে ঈদের আগে বাড়ি যেতে পারিনি। তাই ঈদের রাত কাটিয়ে পরের দিন আ্জ ময়মনসিংহগামী অান্তঃনগর ‘অগ্নিবিনা’ ট্রেনে করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘কী আর করা গরিব মানুষ টাকা পয়সাও দরকার। সংসার সামলাতে ঈদের দিনও কাজ করতে হয়।`
আসগর আলীর মতো আরও অনেকে ঈদের পরদিন ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন ট্রেনে এবং বাসে করে। জানা গেছে, সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের চাপ ছিল। একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে, রাজধানীর ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল মহাখালী ও সায়েদাবাদেও। তবে চট্টগ্রাম থেকে আন্তঃনগর ‘জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ফিরে আসার সময় একদম যাত্রী শূন্য ছিল।
মহাখালী থেকে ময়মনসিংহগামী এনা সার্ভিসের ব্যবস্থাপক মো. আসাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের দিন সকাল-বিকেল ফিরেছে মানুষজন। ঈদের পরের দিনও যাচ্ছেন। তবে এখনও ফিরার পালা শুরু হয়নি। বাসগুলো অনেক কম যাত্রী নিয়ে ফিরে আসছে। তবে যাত্রাপথে যাত্রী রয়েছে। আজও মানুষ বাড়ি ফিরছেন।’
ঈদের পরদিনও যাত্রীর চাপ রয়েছে গাবতলীতেও, বিশেষ করে দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, নওগাঁ ও বগুড়ার যাত্রীর সংখ্যা্ বেশি রয়েছে।
কাজের চাপে বাড়ি যেতে পারেননি সুলাইমান। তিনি দর্জি দোকানে কাজ করেন। বাড়ি রংপুর, তিনি হাসি মাখার মুখে বলেন, ‘কাজের চাপ ছিল, তাই ঈদে যাইতে পারিনি। এ কারণে আজকেই যাচ্ছি।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে গাইবান্ধা গন্তব্যের বাসের সামনে মানুষের ভিড়। সবাই বাড়ি ফেরার টিকেট কিনছেন। আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের আরও বাস ঢাকা ছেড়ে গেছে। বাসে থাকা সিটের প্রায় প্রতিটিই পূর্ণ ছিল যাত্রীতে।’
তিনি জানান, যেসব মানুষ ঈদের আগে যেতে পারেননি, তারা আজ ফিরছেন। আজ রাত পর্যন্ত মানুষ ফিরবেন। আগামীকাল বুধবার যাত্রীর চাপ বেশি থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
মহাখালী বাস টার্মিনালে সাত-আটটি পরিবহন কাউন্টারে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পরের দিন মঙ্গলবার সকালে যাত্রীর ভিড় ছিল বেশি। দুপুরের দিকে যাত্রী কিছুটা কমে আসে। ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে যাত্রীর ভিড় রয়েছে বেশ। এ ছাড়া ঢাকা থেকে সিলেট, বগুড়া, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জের রুটেও যাত্রীর চাপ আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঢাকার বাইরে থেকে খুব কম যাত্রী নিয়ে বাস আসছে। আর ঢাকা ছাড়ছে তুলনামূলক বেশি যাত্রী নিয়ে।
ঢাকা থেকে বগুড়া ও নওগাঁর উদ্দেশে বাস চালায় শাহ ফতেহ আলী পরিবহন। মো. আমানুল্লাহ নামে একজন জানালেন, প্রায় খালি গাড়ি ঢাকায় ঢুকছে। আজকে দুপুর পর্যন্ত যাওয়ার টিকেট বেশি বিক্রি হয়েছে।
এফএইচ/জেএইচ/এমএস