ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সায়েদাবাদে আসলেই টিকিট মিলছে তবে....

প্রকাশিত: ০৩:০৭ এএম, ২৩ জুন ২০১৭

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর তাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী। বৃহস্পতিবার ঈদের আগের শেষ অফিস করেই ঢাকা ছাড়া শুরু হয়। তবে আজ শুক্রবারও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে।

বাড়ির ফেরা মানুষদেরউপচেপড়া ভিড় এখন রাজধানীর ট্রেন ও বাস টার্মিনালগুলোতে। কোনো কোনো টার্মিনাল থেকে গন্তব্যে যাওয়ার পরিবহনের টিকিট পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মিলছে না টিকিট।

এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম চিত্র সায়েদাবাদের টিকিট কাউন্টারগুলোতে। এখানকার টিকিট কাউন্টারগুলো থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, বরিশাল ও খুলনা রুটের পরিবহনের টিকি বিক্রি করা হয়।

নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, ফেনী রুটের যাত্রীরা সায়েদাবাদের কাউন্টারে আসলেই গন্তব্যে যাওয়ার টিকিট পাচ্ছেন। এমনকি কিছু কিছু পরিবহন হাক ছেড়ে যাত্রীদের ডাকছেন। তবে সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটের পরিবহনগুলোর টিকিট মেলা দুরহ হয়ে উঠেছে।

সিলেট ও চট্টগ্রামে যেসব পরিবহন যায় তার সবকটিরই টিকিট ২৭ জুন পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে যারা আগেই সিলেট বা চট্টগ্রমে যাওয়ার টিকিট নেননি তাদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। ভালো গাড়ির টিকিট না পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন নামে চলা লোকাল সার্ভিসের আশ্রয় নিচ্ছেন।

রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ এই টার্মিনাল থেকে সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে হানিফ, ঈগল, শ্যামলী, সৌদিয়া, রয়েল, আল-মোবারকা, মামুনসহ আরও কয়েকটি পরিবহন ছেড়ে যায়। ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষীপুর রুটে চলাচল করে জোনাকী, ইকোন, আল-এরাবিয়া, স্টার লাইন, কে কে ট্রাভেলসসহ আরও বেশ কয়েকটি পরিবহন।

সিলেট, চট্টগ্রাম রুটে চলা চল করা হানিফ পরিবহন কাউন্টারের ইসমাইল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রীদের তেমন চাপ ছিল না। ৪টার পর থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। আর আজ তো দেখতেই পাচ্ছেন যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের আগ পর্যন্তও প্রায় প্রতিটি গাড়িতেই একাধিক ছিট খালি রেখে ছেড়ে দিতে হয়েছে। আজ আর সে অবস্থা নেই। এখন আমরা নতুন করে কোনো টিকিট বিক্রি করছি না। ২৭ জুন পর্যন্ত আমাদের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এখন ২৮ তারিখের আগের টিকিট পাওয়া যাবে না।

যাত্রী হিসেবে শ্যামলী কাউন্টারের গেলে টিকিট বিক্রেতা নিজেকে মো. ইকরামুল পরিচয় দিয়ে বলেন, ভাই অন্য গাড়ি দেখেন। ২৭ তারিখ পর্যন্ত কোনো টিকিট পাবেন না। আমাদের কিছু করার নেই। সব টিকিটই অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।

ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে চলাচল করা আল-মোবারকা পরিবহন কাউন্টারের মো. ইয়াসিন বলেন, আজ যাত্রীদের অনেক চাপ। অনেকে আগেই টিকিট নিয়ে গেছে। তবে আজও কিছু কিছু টিকিট বিক্র করা হচ্ছে। যাত্রীরা এসে টিকিট নিচ্ছেন। তবে রাস্তায় কিছুটা যানজট আছে। বিশেষ করে কাঁচপুর ব্রীজ এবং গাউছিয়া এলাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

ticket

তিনি বলেন, গাউছিয়াতে এমনিই সব সময় কিছু যানজট থাকে। এখন ফ্লাইওভারের কাজ চলছে। ঈদ উপলক্ষে গাড়ি চলাচলের সংখ্যাও বেড়েছে যে কারণে যানজটের পরিমাণ কিছুটা বেড়ছে। তবে গাউছিয়া পার হওয়ার পর খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।

লক্ষ্মীপুরগামী ইকোনো পরিবহনের কাউন্টারম্যান আনোয়ার বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া যাত্রীরা কাউন্টারে এসে ভিড় করছেন। আজও যাত্রীদের চাপ রয়েছে। তবে টিকিট পেতে কোন সমস্যা নেই। কারণ আমাদের আধাঘণ্টা পর পর গাড়ি রয়েছে। আমরা অগ্রিম কোন টিকিট বিক্রি করি না। যাত্রীরা যখন যাবেন তখন কাউন্টারে আসলেই টিকিট পাবেন।

ফেনী রুটের আল-এরাবিয়া পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মো. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের গাড়িতে টিকিটের কোন সমস্য নেই। যাত্রীরা আসলেই টিকিট পাবেন। অধাঘণ্টা পর পর গাড়ি আছে। তবে আগে আসলে ভালো সিট পাওয়া যাবে। আর পরে আসলে পিছনের সিট নিতে হবে অথবা পরের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

ঢাকা ছেড়ে ফেনীর উদ্দেশ্যে পরিবার নিয়ে রওনা হওয়া মো. জাবেদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার অফিস করেই সিলেটের উদ্দেশ্য রওনা হবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সাতাশের রাত হওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত রওনা দেয়া হয়নি। আজ সবাই মিলে রওনা হয়েছি। কাউন্টারে এসে টিকি পেতে কোন সমস্যা হয়নি। ঈদের পরে দুইদিন ছুটি নিয়েছি। ১ জুন ঢাকায় ফেরার আশা আছে।

চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা সবুরা খাতুন বলেন, বেরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। শনিবারও অফিস আছে। বসকে বলে শনিবার ছুটি নিয়েছে। গ্রামে বাবা-মা এবং এক ভাই ও এক বোন আছে। সবাই আমার ওপর নির্ভরশীল। ছোট ভাই-বোন নতুন পোশাকের আশায় বসে আছে। ওদের জন্য এবং মা-বাবার জন্যও নতুন পোশাক কিনেছি। সামর্থের মধ্যেই সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিবো।

এমএএস/এআরএস/আরআইপি