ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সিটি নির্বাচনে ব্যয়ের সীমা লংঘনেও এগিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৯:১৫ এএম, ১৮ মে ২০১৫

সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিধি লংঘন করে প্রত্যেক প্রার্থীই মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। তবে এক্ষেত্রে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা অনুমোদিত ব্যয়ের সীমার অতিরিক্ত নির্বাচনী খরচ করেছেন।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইনের সংস্কার ও হালনাগাদের সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ টিআইবি’র কার্যালয়ে ‘ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১৫ : প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি।

টিআইবি’র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে- অধিকাংশ প্রার্থীর বিভিন্ন আচরণবিধি লংঘন, প্রার্থী কর্তৃক অনুমোদিত সীমার তিনগুণের বেশী ব্যয় এবং নির্বাচন কমিশনের দৃঢ় ভূমিকার অভাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাতিত্ব এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনে প্রতিযোগিতার মনোভাবের ঘাটতির বিষয়গুলোই গবেষণা প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। আর এসব কারণে গত ২৮ এপ্রিল সমাপ্ত তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা উত্তরের জন্য নির্ধারিত ৫০ লক্ষ টাকা সীমার বাইরে তিনজন মেয়র প্রার্থী ২০ লক্ষ থেকে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছেন।

ঢাকা দক্ষিণের তিনজন মেয়র প্রার্থী অনুমোদিত ৩০ লক্ষ টাকার সীমার বিপরীতে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ থেকে ৩ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেন।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের তিনজন মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ কোটি ৪৭ লক্ষ থেকে ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ের চিত্র উদ্ঘাটিত হয়েছে, যদিও এখানে অনুমোদিত ব্যয়ের সীমা ছিল ৩০ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে।

ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থীরা গড়ে ২.৭ কোটি টাকা, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীরা গড়ে ২.২ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থীরা গড়ে ২.৭ কোটি টাকা নির্বাচনে ব্যয় করেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঢাকায় গড়ে যথাক্রমে ১৫.৯৫ লক্ষ টাকা এবং ৮.২৬ লক্ষ টাকা এবং চট্টগ্রামে যথাক্রমে ১৬.৫৮ লক্ষ এবং ১১.৫২ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, দলীয় সমর্থন পেতে চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থীদের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৭ কোটি টাকা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, দলীয় তহবিল এবং ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতাদেরকে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে এই অবৈধ অর্থ প্রদানে প্রার্থী নিজে ছাড়াও অর্থদাতা হিসেবে স্থানীয় ঠিকাদার, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একাংশ জড়িত ছিলেন।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা উভয় ক্ষেত্রেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের তুলনায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছেন।

নির্বাচনে সেনা মোতায়নে দোদুল্যমনতা, প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনে সমানভাবে পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা, ভোট জালিয়াতি, কারচুপি এবং ভোট কেন্দ্র দখলে সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারার দায় নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

স্বাধীনভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ও সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সামগ্রিকভাবে তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলা যায় না বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রেজাউল করিম। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিপু রায় ও তাসলিমা আক্তার গবেষণায় সহযোগিতা করেন।

টিআইবি’র ওই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয় তিন সিটি কর্পোরেশনের ১৩৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি ওয়ার্ডকে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে। ৯ জন মেয়র এবং ১০১ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর উপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।

জেইউ/এআরএস/পিআর