বাজেট জনগণের জন্য শ্রেষ্ঠ তামাশা : ফিরোজ রশীদ
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৭ সালে জনগণের জন্য শ্রেষ্ঠ তামাশা। অর্থমন্ত্রী আপনার কাছে মাফ চাই, ক্ষমা চাই। আপনার কাছে আর আমরা বাজেট চাই না।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন।
ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘এটা কোনো বাজেটই হয়নি। স্পিকারের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই, মাফ চাই। দয়া করে আমাদের মুক্তি দেন। আমরা আর আপনার কাছে বাজেট চাই না। কি বাজেট আপনে দেবেন? এটা কি ভোটের বাজেট? আগামী বছর তো ভোট। নাকি ভোট নষ্ট করার বাজেট দিয়েছেন। ভোটারদের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। ভোটারদের ওপর ভ্যাট ধরেছেন। তারপরও ভোট চান। এদেশের মানুষ এতো পাগল।’
ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বসানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক ধরলেন। আবগারি শুল্ক ধরা হয় মদ, গাঁজা, আফিম, পান, বিড়ি, সিগারেটের ওপর। আপনি জনগণের আমানতের টাকা, ন্যায্য টাকা; সেই টাকার ওপর শুল্ক বসালেন। এমন বসানো বসালেন, এখন আসল থেকে টান পড়েছে। কেন বসালেন, এটা কি ধরনের জুলুম?
তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দিলেন। মানুষ টাকা রাখবে কোথায়? মানুষ কোথায় কার কাছে টাকা রাখবে? ব্যাংকে রাখতে পারবে না। টাকা কি বিদেশে নিয়ে যাবে, বিদেশে তো বড়লোকরা টাকা নিয়ে যায়।’
কাজী ফিরোজ বলেন, ‘গরিবের টাকা থেকে টাকা কাটবেন। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী লুটেরাদের প্রটেকশন দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের আবগারি শুল্ক বসাইয়া, জনগণের ওপর ট্যাক্স বসাইয়া আখের গোছাবেন। আর ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ভর্তুকি দেবেন।’
তিনি অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান করে বলেন, ‘লুটেরাদের নাম প্রকাশ করুন। পারবেন না। আপনার সেই সৎ সাহস নেই। ইব্রাহিম খালেদ একটা রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেই রিপোর্টে আপনাদের দলের লোকদের অনেকেরই নাম আসল। প্রকাশ করলেন না। কেন করলেন না? কেন ব্যবস্থা নিলেন না? একদিন জনগণ ঠিকই ব্যবস্থা নেবে।’
মন্ত্রীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেবিনেটে বাজেট অনুমোদন দিয়ে এখানে সমালোচনা করেন। আপনাদের নৈতিক অধিকার কি আছে? স্যালো মেশিনের ওপর ভ্যাট বসাবেন। এ স্যালো মেশিন দিয়ে নৌকা চলে। নৌকা কিন্তু আর চলবে না। নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে।’
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আয়কর ফরম এতো বড়, পূরণ করতে আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আপনার বাপ-দাদা যারা মারা গেছেন, তাদের ইতিহাস লিখতে হবে। ভ্যাট আদায় করবেন, ওনার মেশিন কোথায়? ওনার সাব অফিস কোথায়?’
এইচএস/এসআর/এমএস