বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ কমিশনের বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ কমিশনের চতুর্থ বৈঠক বসছে শনিবার। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ইতোমধ্যে বৈঠকে যোগ দিতে চার দিনের সফরে মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন তিনি।
শনিবার থেকে দেশটির সাবাহ প্রদেশের কোতা কিনাবালুতে দু’দিনের ওই বৈঠক শুরু হবে। সেখানে মন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ঊচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও যোগ দিচ্ছেন।
দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় গত চার বছর ধরে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের জয়েন্ট কমিশনের বৈঠক হয়ে আসছে। সেখানে বরাবরই দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনায় স্থান পায়।
এবারের আয়োজনে সে বিষয়গুলো তো থাকছেই তার সঙ্গে মানবপাচার বন্ধের বিষয়টি যুক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বর্ডার থেকে অবৈধভাবে মালয়েশিয়াসহ ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে যেভাবে মানবপাচার হচ্ছে তা নিয়ে ঢাকা উদ্বিগ্ন। মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের যেভাবে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র সেটি ভাবিয়ে তুলছে সরকারকে।
এটি বন্ধে দ্বিপক্ষীয় সহয়োগিতার পাশাপাশি আঞ্চলিক উদ্যোগ চায় ঢাকা। কোতা কিনাবালুতে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জয়েন্ট কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলতে চান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য।
কর্মকর্তারা বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এ সফরে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মানবপাচার বন্ধের জন্য যৌথ উদ্যোগ আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে। মানবপাচার বন্ধে বৃহত্তর পরিসরে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডকে আগেই চিঠি দিয়েছে। অবৈধভাবে মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ড গিয়ে বাংলাদেশি যারা আটকা পড়েছেন, তাদের ফেরত আনার ব্যাপারেও বাংলাদেশ সহযোগিতা চাইছে।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রমবিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম মুকুল এ প্রতিবেদককে জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে মানবপাচার বন্ধের বিষয়টি। যারা ইতোমধ্যে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে গিয়ে আটকে পড়েছেন, তাদের কীভাবে ফেরত আনা যায়, সেটা নিয়েও আজকের বৈঠকে কথা হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ মানবপাচার বন্ধে আঞ্চলিক সহযোগিতা চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের একার পক্ষে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আর নৌকায় যারা এভাবে সাগর পাড়ি দিয়েছেন, সেখানে যেতে চাচ্ছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য দেশের নাগরিকরাই সংখ্যায় বেশি। তাই এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।
এদিকে, দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করতে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে শুক্রবার সংবর্ধনা দিয়েছে সাবাহ প্রদেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এসএইচএস/বিএ/পিআর