জাতীয় সংসদ কি তামাশার জায়গা?
নীলফামারী- ৪ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. শওকত চৌধুরী বলেছেন, ‘একটু আগে এখানে (সংসদে) ত্রাণমন্ত্রী মহোদয় ছিলেন। আমি বহুদিন ধরে জাতীয় সংসদে চেঁচাচ্ছি। সৈয়দপুরে স্মৃতিসৌধের অর্ধেক কাজ করেছি। বধ্যভূমির ৯০ ভাগ কাজ করেছি। এই পবিত্র সংসদে উনি কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু উনাকে পাওয়া যায় না, প্রজেক্টে বরাদ্দও পাই না। এসব কী? যেটা বলব সেটা করব, কিন্তু এই তামাশা কেন।’
‘জাতীর সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে তামাশা কিসের? জাতীয় সংসদ কি তামাশার জায়গা? এখানে বললাম আর সচিবালয়ে গিয়ে ভুলে গেলাম?’
রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মো. শওকত চৌধুরী।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘জনগণ মনে করে আমাদের মন্ত্রী টাকা দিছে, আর আমরা মেরে খাইছি। কিন্তু আমরা টাকা পাই না। কাজ করতে পারি না। উনারা বলেন কিন্তু দেন না। এটা কোন কথা? আমাদের বেইজ্জত করার কোনো অধিকার কি তাদের আছে?’
ভরা মৌসুমে চালের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এর মজুদ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। কৃষিমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এই ভরা মৌসুমে চালের দাম ডাবল হল কেন? এটা খতিয়ে দেখা দরকার। আপনারা বলছেন মজুদ আছে, কী রকম মজুদ আছে? মজুদই যদি থাকে তাহলে চালের দাম ডাবল হবে কেন? আমার মনে হয়, মজুদও নাই, কিছু নাই, সব ফাঁকাবুলি।’
চালের দামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের বিষয়ে সরকারের জরুরি দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিতে হবে। চাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা করুন, ফাঁকাবুলি দিয়েন না। ক্ষমতা বড়ই পিচ্ছিল জিনিস। পিছলাতে সময় লাগে না। এজন্য ভালোভাবে চিন্তাভাবনা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে ঘুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করি, দেখি আমরা। ঢাকা শহরের ৯০ ভাগ লোক সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। এটা কেউ এনালাইসিস করে না। ব্যাংকে রক্ষিত টাকা কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে ৯০ ভাগ লোক সরকারের বিপক্ষে। কিন্তু মুখ দিয়ে কেউ কিছু বলে না। ঢাকায় ১৮টা সিট, একটা পাবেন কিনা- আমার সন্দেহ আছে। একটু এনালাইসিস করার চেষ্টা করেন।’
প্রস্তাবিত বাজেটের টাকা সুষম বণ্টন হয়নি বলেও অভিযোগ করেন শওকত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাজেটের টাকা সারা দেশে সুষম বণ্টন হওয়ার কথা। কিন্তু কোথায় সুষম বণ্টন? রংপুর বিভাগে বাজেট নাই। কোনো মেগা প্রজেক্টও নাই। কী কারণে? রংপুর বিভাগে এত চাল হয় এত কিছু হয়, আমরা কিন্তু এখন মফিজ নই। রংপুর বিভাগ দিন দিন উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে।’
এইচএস/এমএআর/আরআইপি