ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কবি সুকান্তের প্রয়ান দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৬:৫২ এএম, ১৩ মে ২০১৫

বাংলা সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি সুকান্ত ভাট্টাচার্যের ৬৭তম প্রয়াণ দিবস আজ। এ উপলক্ষে কবির পৈতৃক ভিটা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার উনশিয়া গ্রামে সুকান্ত স্মৃতি সংসদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও সুকান্ত সেবা সংঘ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তিনি উনিশ শতকের গোড়াতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। এ সময় বিপ্লববাদী ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের ভেতর থেকে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সুকান্ত ভট্টাচার্য।

জন্ম ও বেড়ে ওঠা:
সুকান্ত ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালিঘাটের কাছে মাতামহের ৪৩ এর মহিম হালদার স্ট্রীটের বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা-নিবারন ভট্টাচার্য ও মা-সুনীতি দেবী। পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার (বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলা) কোটালীপাড়া উপজেলার উনশিয়া গ্রামে।

১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। এ সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ায় তাঁর আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। সুকান্তের বাল্যবন্ধু ছিলেন কবি অরুনাচল বসু। সুকান্ত সমগ্রতে লেখা সুকান্তের চিঠিগুলির বেশিরভাগই অরুনাচল বসুকে লেখা। অরুনাচল বসুর মাতা কবি সরলা বসু সুকান্তকে পুত্রস্নেহে দেখতেন। সুকান্তের ছেলেবেলায় মাতৃহারা হলেও সরলা বসু তাকে সেই অভাব কিছুটা পূরণ করে দিতেন। কবির জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছিল কলকাতার বেলেঘাটার ৩৪ হরমোহন ঘোষ লেনের বাড়ীতে। সেই বাড়িটি এখনো অক্ষত আছে। পাশের বাড়ীটিতে এখনো বসবাস করেন সুকান্তের একমাত্র জীবিত ভাই বিভাস ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সুকান্তের নিজের ভাতুষ্পুত্র।

প্রগতিশীল রাজনীতি:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের মম্বন্তর, ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। সেই বছর আকাল নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।

সাহিত্যকর্ম:
সুকান্ত কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা দৈনিক স্বাধীনতার (১৯৪৫) ‘কিশোর সভা’ বিভাগ সম্পাদনা করতেন। মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান করে নেন।তার কবিতায় অনাচার ও বৈষ্যমের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাঠকদের সংকচিত করে তোলে। গণমানুষের প্রতি গভীর মমতায় প্রকাশ ঘটেছে তাঁর কবিতায়। তাঁর রচনাবলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো: ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫) প্রভৃতি। পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকে সুকান্ত সমগ্র নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়। সুকান্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পিসঙ্ঘের পক্ষে আকাল (১৯৪৪) নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।

মৃত্যু:
পার্টি ও সংগঠনের কাজে অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে দুরারোগ্য রোগ যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

জেআর/এমএস