১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ (দশ) নম্বর পুনঃ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর পুনঃ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৫ (পাঁচ) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ (আট) নম্বর পুনঃ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ (আট) নম্বর পুনঃ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান সোমবার সন্ধ্যা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া আবহাওয়াবিদ একেএম রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বুলেটিনেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কি.মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরও সামান্য উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে একই এলাকায় (১৮.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল। এটি সোমবার সন্ধ্যা ০৬ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কি.মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কি.মি. দক্ষিণে, মংলা সমুদধবন্দর থেকে ৪৫০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্দ রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে ভোররাতে মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হলেও সোমবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়ে গিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিকেলের পর বৃষ্টির মাত্রা বাড়তে থাকে। সমুদ্রের পানির উচ্চতাও অস্বাভাবিক বাড়ছে।
কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল জানান, দুপুরে সাগরে ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যায়। এ সময় নিম্নাঞ্চলে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া, নাজিরারটেক, ফদনারডেইল ও কুতুবদিয়া পাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে।
এছাড়া কুতুবদিয়া, চকরিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফেও জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (সিপিসি) কর্মীদের উদ্যোগে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এমএসএস/এমএআর/পিআর/জেআইএম