ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়েই চূড়ান্ত পে স্কেল

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:০৪ এএম, ১১ মে ২০১৫

বেতন কমিশন রিপোর্ট পর্যালোচনা কমিটি সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়েই অষ্টম পে স্কেল চূড়ান্ত করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ অথবা আগামীকাল এ রিপোর্ট হস্তান্তর করা হবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে। পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশে সর্বোচ্চ বেতন ৭৫ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন স্কেল সাড়ে আট হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

পাশাপাশি প্রশাসনের শীর্ষ দুই পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন ৯০ হাজার টাকা এবং সিনিয়র সচিবদের বেতন ৭৮ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে কমিটি। তবে অষ্টম জাতীয় বেতন কমিশনের সুপারিশকৃত ১৬ ধাপের বেতন কাঠামো থাকছে না। আগের নিয়মেই বেতন কাঠামো থাকছে ২০ ধাপের। নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে বর্তমানের চেয়ে অতিরিক্ত ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে পর্যালোচনা কমিটি জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম বেতন কাঠামো পর্যালোচনা কমিটির এ সুপারিশ আগামী সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। এ প্রসঙ্গে পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ভূইঞা রোববার বলেন, নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। শিগগিরই অর্থমন্ত্রীর কাছে এ সুপারিশ হস্তান্তর করা হবে। তবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন স্কেলের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

সূত্র মতে, অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে কিছু কাটছাঁট করে পর্যালোচনা কমিটি তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে। পর্যালোচনা কমিটি অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশ থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন ১০ হাজার টাকা, সিনিয়র সচিবদের বেতন ১০ হাজার টাকা, সচিবদের বেতন পাঁচ হাজার টাকা কর্তন করেছে। তবে সর্বনিম্ন স্কেলে ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। মধ্যম পর্যায়ের স্কেলে বেতন কম কাটা হয়েছে।

২১ ডিসেম্বর সরকারি চাকরিজীবীদের শতভাগ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে অষ্টম বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। ওই সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন এক লাখ টাকা এবং সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৮ হাজার টাকা, সচিবদের বেতন ৮০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন স্কেল আট হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। এতে সদস্য হিসেবে আছেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব।

ওই সময় কমিটিকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনার মাধ্যমে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিরূপণ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে পর্যালোচনা কমিটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। পরে আরও এক মাস মেয়াদ বাড়ানো হয়। ওই সময়ের মধ্যেও কমিটি কাজ শেষ করতে পারেনি। তৃতীয় দফায় আরও ২ মাস সময় বাড়ানো হয়। কমিটি গঠনের ৪ মাস পর এ প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়।

এদিকে পে-স্কেল রিপোর্ট পর্যালোচনা কমিটি সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেলের ব্যাপারে কমিশনের সুপারিশই বহাল রেখেছে। ফলে নতুন বেতন কাঠামোতে বাদ পড়ছে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড। তবে সিলেকশন গ্রেডের বিপরীতে বার্ষিক তিনটি ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

পে কমিশন বেতন কাঠামোয় ২০টির পরিবর্তে ১৬টি গ্রেডের সুপারিশ করেছিল। বিশেষ করে বর্তমান ৮ম ও ৯ম গ্রেডকে একীভূত করে নতুন ৮ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, একইভাবে বর্তমান ১২ ও ১৩ নম্বর গ্রেড এক করে নতুন ১১তম গ্রেড নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি বর্তমান স্কেলের ১৭ ও ১৮ নম্বর গ্রেড একীভূত করে নতুন ১৫ নম্বর গ্রেড নির্ধারণ এবং বর্তমান ১৯ ও ২০নং গ্রেড এক করে নতুন ১৬ নম্বর গ্রেড তৈরির সুপারিশ এসেছে। কিন্তু পর্যালোচনা কমিটি আগের নিয়মে বেতন স্কেলের ২০টি গ্রেড বহাল রেখেছে। পাশাপাশি কমিশনের দেয়া বিভিন্ন ভাতাও কমানো হয়েছে। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বেতন কমিশনের রিপোর্টের সুপারিশ খুব বেশি বাদ দেয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ অর্থমন্ত্রীর কাছে পে-স্কেল পর্যালোচনা কমিটির রিপোর্ট হস্তান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে। আসন্ন বাজেটে নতুন পে-স্কেলের ঘোষণা দেবেন অর্থমন্ত্রী। তবে নতুন বেতন স্কেল কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে। এজন্য আসন্ন বাজেটে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।


এআরএস/এমএস