শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
আজ ১৭ মে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি দেশে ফেরেন। ওই দিন সারাদেশ থেকে আসা লাখো মানুষ তাকে স্বাগত জানান, ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করা হয়। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বিদেশে অবস্থানকালে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মঙ্গলবার বিকেলে টিএসসিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি আনন্দ র্যালি বের করবে ছাত্রলীগ। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হবে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় আলোচনাসভা ও চার দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে তিনি ‘ভিশন ২০২১’ ও ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একদল বিপদগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে সপরিবারে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে তারা রেহাই পান।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে এ দেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে রাজনীতিবিদ হিসেবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আবারও দেশে স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম এ দিবসটি উপলক্ষে লেখা একটি প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের জন্য, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ আবেগ, আনন্দ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিন। ১৯৮১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুবিহীন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় আলো হাতে আধারের কাণ্ডারি হয়ে এসেছিলেন জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা।
দিনটি ছিল রোববার। কালবৈশাখী ঝড়োহাওয়ার বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৫ মাইল। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়াও গতিরোধ করতে পারেনি গণতন্ত্রকামী লাখো মানুষের মিছিল। সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ-শহর-নগর-বন্দর থেকে অধিকারবঞ্চিত মুক্তিপাগল জনতা ছুটে এসেছিল রাজধানী ঢাকায়। সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী লাখো কণ্ঠের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল পুরো রাজধানী।
এফএইচএস/বিএ