ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আমরা কী আপনার এলাকার না?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:০৫ পিএম, ১৪ মে ২০১৭

‘মাননীয় মেয়র, আপনি শুধু গুলশান-বনানী-বারিধারার দিকে নজর দিচ্ছেন। আমরা কী আপনার এলাকার না। তাহলে কেন আমাদের দিকে নজর দিচ্ছে না?’ এভাবেই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হককে প্রশ্নটি করেন মিরপুরের এক বাসিন্দা।

সোমবার রাত ৮টার দিকে নগর ভবনে নিজ মেয়াদের দুইবছর পূর্তি উপলক্ষে ফেসবুকে লাইভে কথা বলেন মেয়র আনিসুল হক। এ সময় ঢাকা উত্তরের বিভিন্ন সমস্যা ও সফলতা নিয়ে কথা বলেন বাসিন্দারা।

মিরপুরের ওই বাসিন্দার জবাবে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘নজর পড়ে সব এলাকায়। তবে সব এলাকায় নজর দেয়া আমাদের সামর্থ্য নেই, নেই আর্থিক সঙ্গতিও। এরই মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় হবে।’

লাইভের শুরুতেই নগরবাসীর উদ্দেশ্যে আনিসুল হক বলেন,‘আপনাদের কাছে আমাদের অনেক প্রতিশ্রুতি ছিল। ক্লিন ঢাকা, গ্রিন ঢাকা এবং নিরাপদ ঢাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম।’

‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন, আমরা নির্বাচিত হয়েছি। ঢাকার দুই প্রান্ত থেকে আমরা দুজন মেয়র কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজে আমরা কতটুকু সফল হতে পেরেছি,কতটুকু হয়েছি সেটা আপনারাই বিবেচনা করবেন।’

ধ্রুব নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন,ডিএনসিসির অনেক পার্ক দখল করে খোদ কাউন্সিলরসহ অনেকেই স্থাপনা নির্মাণ করছেন।

এ বিষয়ে মেয়রের বক্তব্য, ‘পার্কের দিকে দৃষ্টি দেয়ার মতো আপাতত আমাদের সময় হয়নি। তবে পার্কগুলোকে ভালো করার জন্য আমরা একটি বড় সাহায্য পেয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে ২৬টি পার্ক ও ৬টি খেলার মাঠ দখলমুক্ত হবে। এসব জবর দখল থাকবে না।’
 
‘নগরীর কিছু কিছু স্থানে ভালো কাজ হচ্ছে, কিছু স্থানে হচ্ছে না’ এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ২০১৫ সালে আমরা যখন দায়িত্ব নিই তখন আগের কিছু প্ল্যান ছিলো। এর মধ্যে উত্তরা,বারিধারা এলাকা উল্লেখযোগ্য।

‘এরপর আমরা মিরপুরসহ অন্যান্য এলাকার পরিকল্পনা হাতে নিই। যে কারণে কাজ কমবেশি দেখা যাচ্ছে। সব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আর এই বৈষম্য দেখা যাবে না।’

আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আনিসুল বলেন, ‘আমাদের এক হাজার ২৬৮ স্থায়ী কর্মচারী আছেন। অস্থায়ী পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছেন ৩৫০০ জন। তাদের দিকে আমরা প্রতিনিয়ত নজর রাখছি।’
DNcc
মেয়র আনিসুল হক বলেন, রাজস্ব আয় দিয়ে রাজস্ব ব্যয় মেটানো কঠিন। তাই আমাদের সরকারের উপর নির্ভর থাকতে হয়। হিসেব করে দেখেছি ৩২ শতাংশ কম ইক্যুইপমেন্ট নিয়ে সিটি কর্পোরেশন চালিয়ে নিচ্ছি।’

ডিএনসিসির অনেক ফুটপাত দখলমুক্তের বিষয়ে মেয়র বলেন,ফুটপাত আস্তে আস্তে দখলমুক্ত হচ্ছে। ফুটপাত এক ধরনের বাণিজ্য। যারা ফুটপাতে বসেন তাদের পেছনে একটি শক্তিশালী হাত রয়েছে। এর সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য জড়িত।

‘আজ ক্লিয়ার করলে আবার দখল হয়ে যায়।আমরা এক ধরনের প্ল্যান করছি। এদের (হকার) একটা পরিকল্পনার মধ্যে এনে কিভাবে শৃঙ্খলায় ফেরানো যায়, সে বিষয়ে। আমরা ফুটপাত দখলমুক্ত করবই,’ বলেন তিনি।
 
উত্তরার উন্নয়ন কাজে ময়লাযুক্তপানি ব্যবহার করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের জবাবে মেয়র বলেন, অভিযোগটি নিচ্ছি। তবে এটা হওয়ার কথা নয়। তবুও আমরা দেখবো। কেউ যদি করে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নগরীতে গণপরিবহন সমস্যার বিষয়ে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ঢাকায় ৬ হাজার ৩১১টি অনুমোদিত বাস রয়েছে। আশপাশের এলাকা থেকে আরও ২ হাজার ১০০ বাস বিআরটিএ থেকে অনুমোদন নিয়েছে। এসব বাসের অন্তত ২০০ জন মালিক আছেন, তাদের রয়েছে আবার শেয়ার হোল্ডার।
‘ফলে বাসের মালিক ২ হাজারের উপরে দাঁড়ায়। আমার কোনো আইনি ক্ষমতা নেই। তবুও কাউকে না কাউকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমি মালিকদের সঙ্গে বসেছি। তারা ৬টি কোম্পানি ও রুটে নামিয়ে আনতে একমত হয়েছেন। এতে কারো কোনো ক্ষতি হবে না।’

এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, গাছ কেটে নগরীতে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আপনি বলেছিলেন একটা কাটলে তিনটা লাগানো হবে। এখন উত্তরা এলাকা খাঁ খাঁ হচ্ছে।

এর জবাবে মেয়র বলেন, আমরা গাছ কাটছি এটা সত্য। তবে একটা গাছ কাটার আগে অনেক ভাবছি। ৩টি বিষয় চিন্তা করে গাছ কাটা হচ্ছে। গাছটা যদি ড্রেন নষ্ট করে বা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিংবা রাস্তা না হয় ফুটপাত নষ্ট করছে-তবেই আমরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।

রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের বিষয়টি দৃষ্টিগোছর করা হলে মেয়র আনিসুল হক বলেন,এ বিষয়ে আমার তো কিছু করার নেই। ভাড়ার ডিপার্টমেন্ট আমার না।এটি যে কার দায়িত্ব তাও জানি না। তাই আমি সরাসরি আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারছি না।

‘তবে বাড়ির মালিকরা কখনও কখনও অত্যাচার করছে।আজ বলছি সরকার যেনো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেন।এটা আমারও দাবি।’
নগর সরকার প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক বলেন, আমার কাছে নগর সরকার এক ধরনের অলৌকিক কল্পনা। আমরা এখনও রাজনৈতিকভাবে তৈরি নই, যেখানে মেয়রের কাছে সব ক্ষমতা থাকবে। তবে আমরা ১০০ পুলিশ চেয়েছি। তা পেলে আমরা পুলিশের কোনো কাজে হাত দেবো না।

‘যেখানে রেলওয়ে পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ আছে সেখানে এতো বড় দুটি শহরের জন্য ১০০ পুলিশ থাকবে না, এটা হয় না,’ যোগ করেন এই নগর পিতা।
 
এমএসএস/এমএমএ

আরও পড়ুন