বিদেশি মিশনগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উদ্বিগ্ন কূটনীতিকরা
ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোর সামনের ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। তবে এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রাচার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ উদ্বেগের কথা জানান তারা।
এদিন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ অন্তত অাটজন পশ্চিমা কূটনীতিক একসঙ্গে রাষ্ট্রাচার প্রধান একে এম শহীদুল করিমের সঙ্গে বৈঠক করেন।
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দূতবাসের সামনের ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা বেষ্টনীও সরানো হচ্ছে। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার হাইকমিশনার ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আপনাদের (বাংলাদেশের) অতিথি। আমাদের নিরাপত্তাসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হোস্ট কান্ট্রির দায়িত্ব।
তাদের নিরাপত্তা এবং সুযোগ-সুবিধার যেসব উদ্যোগ রয়েছে তা অক্ষত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে এনেছি। আমরা একটি কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে চাই।
এদিকে রাষ্ট্রাচার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতামূলক চুক্তি টিকফার আওতায় তৃতীয়বারের মতো বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ। আগামী ১৭ মে ঢাকায় এ বৈঠক হবে। এ নিয়ে গতকাল শনিবার পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন বার্নিকাট।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বার্নিকাট বলেন, টিকফার বৈঠকটি হবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রশাসনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। সঙ্গত কারণেই আসন্ন বৈঠকে বিস্তৃত পরিসরে আলোচনার সুযোগ হবে। এখানে বাণিজ্য, বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে কথা হবে। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বা এফডিআইয়ের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। টু ওয়ে ট্রেড নিয়েও আলোচনা হবে।
টিকফা বৈঠকের পরদিন (১৮ মে) ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) নির্দেশিত সাসটেইনেবিলিটি কম্পেক্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন দূত বলেন, সেখানে শ্রম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিস্তারিত পর্যালোচনা হবে। এক্ষেত্রে আর কী করণীয় তা নিয়েও কথা হবে। বিশেষ করে আইএলও নির্দেশিত প্যারাগ্রাফ মতে বাংলাদেশের পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। এসময় বাংলাদেশে একটি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ শ্রম ব্যবস্থাপনা’ যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আগামী ২১ মে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। সৌদি আরবের আয়োজনে আমেরিকা-অ্যারাব ও মুসলিম ওয়াল্ড সামিট শীর্ষক ওই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে আমেরিকা এবং মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ নেতাদের আরও ঘনিষ্টতার ঘোষণা আসতে পারে।
এ বিবষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন এ উদ্যোগ অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। তিনি এর সফলতা কামনা করেন।
জেপি/জেডএ