‘ধর্ষণের আলামত পরীক্ষায় সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে’
রাজধানীর বনানীর রেইন ট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর ক্ষেত্রে ঘটনার আলামত পরীক্ষা সব ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য ওই দুই তরুণীর ডিএনএসহ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের ডিএনএ পাওয়া গেলে ভিকটিমের ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখে বোঝা যাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল কিনা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন ডা. সোহেল মাহমুদ।
তিনি বলেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত শরীরে এর আলামত থাকে। তা আমরা প্রাথমিক সময়ের পরীক্ষায় বুঝতে পারি। তবে মাস পেরিয়ে গেলে অস্থায়ী পদ্ধতি অনুসরণ করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ধর্ষণে জোর প্রয়োগের কোনো আলামত থাকলে ডিএনএ পরীক্ষায় তা ধরার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য ভুক্তভোগী দুই তরুণীর ডিএনএ পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছে। আসামিদের ডিএনএ পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যেত।
ঘটনার সময় ভিকটিমের পোশাক রাসায়নিক পরীক্ষা করে কিছু পাওয়া সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় গড়িয়েছে। কিছু পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তারপরও পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। যদিও আমাদের কাছে পরীক্ষার জন্য ভিকটিমের পোশাক দেয়া হয়নি।
গত ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই তরুণী। তাদের অভিযোগ, সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধুদের যোগসাজশে অস্ত্রের মুখে তাদের ধর্ষণ করা হয়।
ওই ঘটনার ৪০ দিন পর গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তারা। মামলায় সাদনান সাকিফ, তার বন্ধু সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষীকে (নাম পাওয়া যায়নি) আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পরদিন ধর্ষণের আলমত পরীক্ষার জন্য ওই দুই তরুণীকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেসময় ধর্ষণের আলামত নিয়ে চিকিৎসকরা সংশয় প্রকাশ করেন।
পরে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সোহেল মাহমুদ ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কবির সোহেল, মমতাজ আরা, নিলুফার ইয়াসমিন ও কবিতা সাহা।
বোর্ডের অধীনে দুই তরুণীর মাইক্রোবায়োলজি, রেডিওলজি ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেও জানিয়েছেন বোর্ড প্রধান।
জেইউ/এসআর/পিআর