৫০ হাজার টন চাল আমদানির দরপত্র আহ্বান
বোরো মৌসুমের ধান কাটার আগেই ৫০ হাজার টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে সরকার। আগামী ২১ মে’র মধ্যে সমপরিমাণ বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানিতে আগ্রহী দরদাতাদের খাদ্য অধিদফতরে প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। সরকারি গুদামে চাল মজুত তিন লাখ মেট্রিক টনে নেমে আসায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অধিদফতরকে চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৫০ হাজার টন করে দুই প্যাকেজে আপাতত এক লাখ টন চাল বিদেশ থেকে কেনা হবে। প্রকাশিত দরপত্রে চাল আমদানি শুল্কের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, চাল আমদানিতে আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার হবে না।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনের তুলনায় খাদ্য মজুত বেশি রয়েছে। এ সময় খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি চালানোর কোনো কারণ নেই। তারপরও হাওর এলাকায় চাল বিক্রি হচ্ছে। এই সময় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিও চালানো হয় না। হাওরবাসীর জন্য তাও চালানো হচ্ছে। পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত সেখানে এসব কর্মসূচি চলবে।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় সরকারের খাদ্য মজুত অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। বর্তমানে সরকারি গুদামে মজুদ রয়েছে চার লাখ ৭৭ হাজার ৯০ টন চাল ও গম। গত বছর এ সময় ছিল ১০ লাখ ২২ হাজার ৪০ টন। ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি কর্মসূচিতে সরকারি মজুত থেকে সাত লাখ টন চাল সরবরাহের ফলে এবার এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই মূলত চাল আমদানি করতে যাচ্ছে সরকার।
খাদ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরের পর এই প্রথম সরকারিভাবে চাল আমদানি করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারিভাবে তো হয়নিই, বরং ৫০ হাজার টন চাল শ্রীলঙ্কায় রফতানি করা হয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে আমদানি হয়েছে। এই অবস্থায় ২০১৫ সালে চাল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় সরকার। আনুষঙ্গিক শুল্ক বাদ দিয়ে আরও ৩ শতাংশসহ মোট আমদানি শুল্ক দাঁড়ায় ২৮ শতাংশ।
আমদানি শুল্কের ফলে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে লাভবান হয় দেশের কৃষক। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী গত মাসে হাওর এলাকায় অকাল বন্যায় প্রায় ৬ লাখ টন বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এবারের বন্যায় ফসলহানির পরিমাণ ২২ লাখ টন।
এমইউএইচ/আরএস/ওআর/এমএস