ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিদেশি চাপে বিচলিত নয় সরকার

প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ০৪ মে ২০১৫

দেশের রাজনীতিতে বিদেশি চাপকে আমলে নিতে চায় না সরকার। সদ্য সমাপ্ত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ইস্যুতে জাতিসংঘসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক দূতিয়ালির পর সরকার তাদের এমন বার্তা দিয়ে দিয়েছে। সরকার মনে করছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি একমাত্র বাংলাদেশের। আর বিদেশিদের তৎপরতা তাদের নিয়মিত কাজ। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কথা বলে সরকারের এমন মনোভাবের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে জাগো নিউজ।

সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব ওই নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজনৈতিক সমঝোতার নানা তৎপরতা চালায়। বিদেশিদের ওই সময়ের চেষ্টা ব্যর্থ হলেও সম্প্রতি আবারও তাদের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য সরকারের ওপর বিদেশি চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে বিদেশিদের কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ তবে বিদেশি চাপের কথা উড়িয়ে দিতেই চাইছে সরকার। গত রোববার এমন ইঙ্গিত দিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকার এমন কোনো অপরাধ করেনি যে, বিদেশি চাপের কাছে মাথানত করবে।’

কূটনৈতিক এমন তৎপরতা তথা চাপের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ পুরনো সংস্কৃতি। আমরা বিষয়টিকে রাজনীতির অংশ হিসেবেই বিবেচনা করছি। কূটনৈতিকরা এখন যে তৎপরতা চালাচ্ছেন, তাতে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার জবাব দিয়েছেন।’

অপরদিকে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের মধ্য দিয়েই বিদেশি চাপের বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। সরকার স্বীকার করুক বা না করুক বিদেশি চাপ এখন দৃশ্যমান।

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে কূটনীতিকদের সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে বর্ষিয়ান রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট বরাবরই বিদেশি শক্তির ওপর ভর করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেছে। তাদের বিদেশ নির্ভরতা এখনও বজায় রয়েছে। গত তিন মাসে সন্ত্রাস করে জন-আস্থা হারিয়ে বিএনপি আবারও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ধরণা দিচ্ছে। এতে তারা কূল পাবে না।’

অবশ্য ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘দুই জোটই বিদেশনির্ভর রাজনীতি করে। যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা বিদেশি চাপ আমলে নিতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে সরকার দেশি-বিদেশি সমালোচনার মুখে পড়েছিল, তা তো সবারই জানা। পার্লামেন্টে কার্যকরি বিরোধী দল নেই। তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারাই প্রধান বিরোধী দল। আর এ কারণেই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করার সুযোগ পেয়েছে। সকলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে আন্তর্জাতিক মহলের এমন চাপ অব্যাহত থাকবে।’

বিদেশিদের তৎপরতা রাজনীতিতে কতটুকু প্রভাব ফেলবে তা জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০১৫ সাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ আর আগের অবস্থানে নেই। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরাই সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। বিদেশি চাপ আমলে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি এখন জামায়াতের ফাঁদে। আর এ কারণেই তারা দিশেহারা। খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান বিদেশি লবির মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে, যেমনটি ইতিপূর্বে করা হয়েছে।

এএসএস/বিএ