জঙ্গিবাদের চেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি : প্রিন্স মুসা
দেশের কোনটি সবচেয়ে বড় সমস্যা ? জঙ্গিবাদ নাকি নজিরবিহীন কলঙ্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত বর্তমান? আমার মতে জঙ্গিবাদ ভয়ংকর সমস্যা হলেও তার চেয়ে ভয়ংকর সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।
শুল্ক ফাঁকি ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দার কাকরাইলস্থ সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক নারী সহকারীকে দিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। প্রিন্স মুসার লিখিত বক্তব্যও ওই নারী সহকারী সাংবাদিকদের পাঠ করে শোনান।
লিখিত বক্তব্যে মুসা বলেন, বিগত দুই যুগ ধরে এ দেশে একটি কলঙ্কিত ও বিষাক্ত অধ্যায় সংক্রমিত করেছে দেশ ও জাতির উন্নয়নের ধারা। ভয়ংকর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জিম্মি করেছে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রা। মেধাবীদের সরকারি চাকরি থেকে করা হচ্ছে বঞ্চিত। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মেধাশূন্য, অযোগ্য ও অপদার্থরা প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সেই মেধাবীদের শূন্যস্থান পূরণ করেছে। এর ফলে উভয় ক্ষেত্রে দেশের ভয়াবহ দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হাজার হাজার পরিবার।
দুর্নীতিবাজ ও দুষ্কৃতিকারীদের বিচার কে করবে প্রশ্ন রেখে প্রিন্স মুসা বলেন, ১০-২০ লাখ টাকা ছাড়া সরকারি চাকরি মেলে না। টাকার বিনিময়ে দুর্নীতিবাজরা চাকরি দিচ্ছে কম মেধাবীদের। কে তাদের বিচার করবে? কিভাবে তাদের বিচার হবে? দেশ ও জাতির জন্য আজ এটি ভয়ংকর সমস্যা।
আরও একটি ভয়ঙ্কর সমস্যা হুন্ডি ব্যবসা। অধিকাংশ ব্যবসায়ী বৈধ ও অবৈধভাবে দেশে ব্যবসা করে দেশের সমস্ত সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছে। যা অবৈধভাবে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। এটি ওপেন সিক্রেট। প্রতিটা নাগরিক মাত্র বিদেশে ৫ হাজার ডলার বৈধভাবে নিতে পারে। এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ আমলা ও তথাকথিত রাজনীতিবিদও অবৈধভাবে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। তারা কোথায় পেলো সে টাকা? লাখ লাখ ডলার কি করে তারা বিদেশ পাচার করলো?
তিনি বলেন, আরব দেশে হাজার বাংলাদেশি গৃহকর্মী যৌন নির্যাতনের শিকার। কে শুনবে তাদের গগণ বিদারী আহাজারি। কে দেবে তাদের পরিত্রাণ। অদৃশ্য শক্তির স্বেচ্ছাচারিতা ও কূটনীতিক বিপর্যয়ের কারণে দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান ও জনশক্তি রফতানি খাতকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
স্বাস্থ্যখাত নিয়েও লিখিত বক্তব্যে বিস্ফোরক সব অভিযোগ আনেন প্রিন্স মুসা। তিনি বলেন, জাতীয় স্বাস্থ্যখাত ব্যক্তিমালিকানাধীন হেলথ কেয়ার ব্যবসার কাছে জিম্মি। সর্দি কাশির পরীক্ষা করতে সোজা চলে যায় বিদেশে। এ সুযোগে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এর চিরস্থায়ী সমাধান চান তিনি।
তিনি বলেন, আমি ৯ মাস নানা কারণে শারীরিক ও মানসিক রোগে অসুস্থ। আমার বাকশক্তি লোপ পেয়েছে। কিন্তু আমাকে আজ কোন প্লাটফর্মে দাঁড় করা হয়েছে? আমি কি এমন অপরাধ করেছি? কেন আমাকে জাতির সামনে বার বার এইভাবে অপমান ও অপদস্থ করা হচ্ছে। আমি ঋণ খেলাপি নই। বরং আমার অ্যাকাউন্টের শত শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা এনে সমৃদ্ধ করেছি ব্যাংক সেক্টরকে। কারো প্রতিপক্ষ, রাজনীতিবিদ নই। বরং খুলে দিয়েছি অর্থনৈতিক মুক্তির দুয়ার। এসেছে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ (রেমিটেন্স)।
ধনকুবের মুসা বলেন, ‘দেশে জঙ্গিবাদের চেয়ে বড় সমস্যা নজিরবিহীন দুর্নীতি। দেশে উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। গণমুখী প্রশাসন সৃষ্টির মাধ্যমে অদক্ষতা ও দুর্নীতি চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
জেইউ/জেএইচ/পিআর