ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

তুরস্কে খ্যাতি বাড়ছে বাংলাদেশি ওষুধ ও পাটজাত পণ্যের

প্রকাশিত: ০৬:১৯ এএম, ০৪ মে ২০১৫

চল্লিশ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ফার্মাসিউটিক্যালস বাজার এখন গোটা তুরস্কে। এর মধ্যে দশ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য দেশটি আমদানি করছে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে। আঙ্কারায় বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, এই দশ বিলিয়ন ডলারের একটা অংশও যদি বছরে বাংলাদেশ পায়, তবে সেটা হবে আমাদের জন্য বড় অর্জন।

রাষ্ট্রদূত জানান, মূলত তার উদ্যোগেই ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করে তুরস্ক, যা ছিল ব্রেক-থ্রো। এখন এটা রূপ নিয়েছে আমাদের গর্বের বিষয়ে।

বাংলাদেশে তৈরি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ওষুধের আরো ব্যাপক সম্ভাবনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তুরস্কের ওষুধের বাজার ধরতে যে কোন বিদেশি কোম্পানিকে যেখানে প্রায় ৫ বছর সময় লাগে সেখানে আমরা মাত্র আড়াই বছরেই সফল হতে পেরেছি। ২০১১ সালে প্রক্রিয়াটি প্রথম আমি শুরু করি এবং ওই বছর এপ্রিল মাসে ঢাকা থেকে একটা ডেলিগেশন এখানে আসে। মেইন ইউরোপের মতোই জটিল প্রক্রিয়া এখানেও। তখন উচ্চপদস্থ টার্কিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ করে এখানকার ডিজি ফার্মাসিউটিক্যালস সহ বিশেষ ডেলিগেশনকে ঢাকায়ও পাঠিয়েছিলাম।

বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের আদ্যোপান্ত সরেজমিনে দেখে এসে টার্কিশরা খুবই সন্তুষ্ট বলে জানান কূটনীতিক জুলফিকার রহমান। সুনির্দিষ্ট করে তিনি বলেন, আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টগুলো দেখার পর ফিরে এসে তারা বলেছেন, বিশ্বমানের ওষুধ উৎপাদনের ক্ষমতা আছে বাংলাদেশের। এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়।

রাষ্ট্রদূত আরো জানান, তারপর থেকে সবকিছু সহজ হয়ে গিয়েছে এবং বিরাট একটা অ্যাভিনিউ খুলতে যাচ্ছে এখন এই খাতে। ফার্মাসিউটিক্যালস ও রেডিমেইড গার্মেন্টস (আরএমজি) ছাড়াও বাংলাদেশের জুট ইয়ার্ন তথা পাট দিয়ে তৈরি সুতলি বা রশিও বড় আকারে এখানে আসছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান।

তুরস্কের কার্পেটের সুখ্যাতি বিশ্বজোড়া। বাংলাদেশ থেকে আসা জুট ইয়ার্ন দেশটিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে কার্পেটের নিচে। রাষ্ট্রদূত জানান, পরিবেশ বান্ধব কার্পেট চায় এখানকার লোকজন এবং এ কারণে জুট ইয়ার্ন মিক্স করে কার্পেটটা তারা তৈরি করছে। তুরস্কের বাজারে বাংলাদেশি এই পণ্যের চাহিদা বহুগুণে বাড়লেও আমাদের সাপ্লাই ক্যাপাসিটি কম হওয়ায় ডিমান্ড অনুযায়ী আমরা সাড়া দিতে পারছি না। তারপরও বছরে ২ থেকে আড়াইশ’ মিলিয়ন ডলারের জুট ইয়ার্ন বাংলাদেশ থেকে এখন আসছে টার্কিতে। এটা আরো বাড়ানো সম্ভব হতো যদি ঢাকাতে সাপ্লাইয়ার বেশি থাকতো।

অন্যদিকে ক্যামিকেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্টের পাশাপাশি তুরস্ক থেকে জেনারেটর ও ফ্রিজ, টিভি বাংলাদেশে যাচ্ছে বলে এই প্রতিবেদককে জানান রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান।

বাংলাদেশে টার্কিশ বিনিয়োগ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, কিছু ইনভেস্টমেন্ট ইতোমধ্যে বাংলাদেশে গিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বাখরাবাদ-ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাস পাইপলাইনের কাজ চলছে। অ্যানার্জি সেক্টরে সম্ভাব্য আরো কিছু ইনভেস্টমেন্ট এখন আলোচনার টেবিলে রয়েছে। আরএমজি সেক্টরে আগে থেকেই ছিল, এখন তুর্কি বিনিয়োগ ঢাকায় যাচ্ছে কার্পেট ম্যানুফ্যাকচারিংয়েও। এখান খেকে বেশ কিছু কার্পেট ম্যানুফেকচারিং কারখানা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে রি-লোকেট করেছে। রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমানের সন্তোষ, সব মিলিয়ে ইটস অ্যা ভেরি গুড সিচুয়েশন।

এমজেড/পিআর