ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অর্থের অভাবে কেউ বিচার পাবে না তা হতে পারে না

প্রকাশিত: ০৭:১৪ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থের অভাবে কেউ বিচার পাবে না, তা হতে পারে না। অসহায়-গরীব-দুঃখি সকলেই  যাতে ন্যায় বিচার পায় আমরা সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।

তিনি বলেন, বিচার না পাওয়ার যে কী জ্বালা তা আমার চেয়ে বেশি আর কেউ বুঝতে পারবে না। কারণ, আমার বাবা তার জীবনের বড় একটা অংশ জেলে কাটিয়েছেন। শুধুমাত্র মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে তিনি বছরের পর বছর জেলে বন্দী থেকেছেন। অথচ তার কোনো অপরাধ ছিল না।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বার বার জেল খেটেছেন এবং জেলের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।

পেছনের দরজা দিয়ে বা বন্দুকের নল দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে তারা জনগণের ভাষা বুঝতে পারে না- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের কাজ হচ্ছে, জনগণের স্বার্থে যারা কথা বলবে, তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো আর তাদের দাবিয়ে রাখা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা স্বপরিবারে হত্যা করেছে তাদের বিচার করেনি পরবর্তী সরকার। বরং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। তৎকালীন সরকার শুধু তাদের দায়মুক্তিই দেয়নি, খুনিদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুক, রশিদ ও হুদাসহ অন্যদের সংসদ সদস্য, বিরোধী দলের নেতা বানানো হয়েছে। অনেককে বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দেয়া হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এই হত্যা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, এই হত্যার মধ্যে দিয়ে তারা একটি আদর্শকে হত্যা করতে চেয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে নেতা বানানো হয়েছে। তারা কোনো দিনও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের জন্য ন্যায় বিচারের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আমাদের সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জনগণের মৌলিক অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। জনগণ যাতে ন্যায় বিচার পায় সে জন্য সংসদে আইনগত সহায়তা আইন পাস করি। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। তারা আইনটি কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আইনি সহায়তা বলে যে একটি আইন আছে এটা তারা বোঝেইনি।

রাজনীতি করতে গিয়ে আমি জেল খেটেছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে সাব জেলে একাকি রাখা হয়েছে। তাই জেলের জ্বালা আমিও বুঝি।

তিনি বলেন, কারাগারে এমন লোক আছে যার কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। অনেকে আছে অসহায়, গরীব। তারা কিভাবে বিচার পাবে? তাদেরও তো বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। গরিব-অসহায় বলে তারা বিচার পাবে না, এটা মেনে নেয়া যায় না। তাদের বিচার পাওয়ার জন্য প্রত্যেক জেলায় স্থায়ী লিগ্যাল এইড অফিস করে দিয়েছি। এই অফিস গরীব-দুঃখি মানুষকে আইনি সহায়তা দেবে।

বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতি সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করবেন। ক্ষমতার ক্ষেত্রে আমি বড়- এটা ভাববেন না। ক্ষমতা কারো চেয়ে কারো কম নয়। একে অপরকে দোষারোপ করলে রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারবে না। এককভাবে কেউ ক্ষমতার অধিকারী- এ কথা কেউ বলতে পারবেন না। সবাই মিলে সবাইকে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।

তিনি বলেন, সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ-এশিয়ার মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। তবেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।

এফএইচএস/এনএফ/এমএস

আরও পড়ুন