ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল শিশুটি

প্রকাশিত: ০৮:১০ এএম, ২৮ আগস্ট ২০১৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া নবজাতক উদ্ধারের পর চুরির কারণ ও রহস্য বেরিয়ে এসেছে। শিশু চোর রাশেদা খানম পারভিন (৪৮) হাসপাতালে আত্মীয় ভর্তি আছে উল্লেখ করে সেখানে অবস্থান করেন। এর পর বিভিন্নভাবে চুরি যাওয়া নবজাতকের মা রুনা আক্তার ও তার পরিবারের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নবজাতকের কান্না থামানোর কথা বলে কোলো নিয়ে হাঁটাহাঁটির একপর্যায়ে পালিয়ে যান তিনি। এর পর শিশুটিকে তিনি ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিঃসন্তান রহিমার কাছে বিক্রি করে দেন।

র‌্যাব সদর দফতরে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়। বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগাল উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ।

এদিকে সন্তানকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বাবা কাওসার হোসেন বাবু। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের সরব ভূমিকার কারণেই আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি। সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের কারণে ঘটনাটি গুরুত্ব পেয়েছে। আর র‌্যাব আমার সন্তানকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই যমজ ছেলের একজনকে সাংবাদিক, অপরজনকে র‌্যাব কর্মকর্তা বানাতে চাই।’

গত ২০ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে কাওসার হোসেন বাবুর স্ত্রী রুনা আক্তার যমজ ছেলের জন্ম দেন। এর এক দিন পরই ওয়ার্ড থেকে একটি নবজাতক চুরি হয়। র‌্যাব ওই নবজাতককে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে ‍উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকায় বেলী আক্তার রহিমা (৪৫) ও রাশেদা খানম পারভিন (৪৮) নামে দুই নারীকেও আটক করে র‌্যাব।

র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগাল উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘রাশেদা খানম ধাত্রীবিদ্যায় পারদর্শী। সে বোর্ডবাজার এলাকায় এ কাজ করে থাকে। এ ছাড়া তার একটি ফার্মেসি রয়েছে। সে ওই ফার্মেসি ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বাচ্চা নষ্ট করার কাজও করত। অনেক সময় অবৈধ বাচ্চা প্রসবের পর মারা যাওয়ার কথা বলে সেই বাচ্চা বিক্রি করে দিত।’

চুরি হওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘৭-৮ মাস আগে রাশেদা বেগমের সঙ্গে একটি বাচ্চা দেওয়ার চুক্তি হয় নিঃসন্তান রহিমার। রহিমা তাকে ৪০ হাজার টাকা দেন। এ লক্ষ্যে পারভিন ঢামেক হাসপাতালে আত্মীয় ভর্তি আছে উল্লেখ করে সেখানে অবস্থান করেন। বিভিন্নভাবে রুনা আক্তার ও তার পরিবারের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন তিনি। ২০ আগস্ট রাতে সে ওই ওয়ার্ডে অবস্থান করে পরদিন সুযোগ বুঝে ওই নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর পর থেকেই চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা নিয়ে র‌্যাব কাজ শুরু করে। অবশেষে র‌্যাব-৩ এর একটি দল বোর্ডবাজার এলাকা থেকে নবজাতক উদ্ধারসহ দুই নারীকে আটক করে।’

এদিকে শিশু চুরির ঘটনায় ওই দিনই হাসপাতালের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং শাহবাগ থানায় ‍মামলা দায়ের করা হয়।

পরে নবজাতক চুরির দায় স্বীকার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২৬ আগস্ট দুপুর ১২টায় হাসাপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান নবজাতক চুরির দায় স্বীকার করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

এদিকে বুধবার এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে নির্দেশ দেওয়া হয় ও চার সপ্তাহের মধ্যে এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।