৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সহায়তা পেয়েছেন কৃষক : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ৮ বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি সহায়তা দেয়া হয়েছে। সরকার দেশের কৃষক ও কৃষিখাতের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার ফলেই কৃষিতে ব্যাপক সাফল্য এসেছে।
১৯ এপ্রিল, বুধবার বাংলাদেশ কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো ২ কোটি ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯৭ জন কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার। যার মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের সার, বীজ ও যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে।
‘সেচ মওসুমে কৃষকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। বর্গা চাষিদের জন্য কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে বিনা জামানতে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
কৃষক লীগের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ কৃষক সমাজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের স্বার্থরক্ষার জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কৃষক লীগ দেশের কৃষক সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষক লীগ কৃষকদের সংগঠিত করে তাদের দাবি আদায়সহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।
কৃষকদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর নেয়া নানা প্রকল্পের কথা তুলে ধরে শেষ হাসিনা বলেন, জাতির জনক স্বাধীনতার পরপরই কৃষিখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। তার সরকার কৃষকদের কল্যাণে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের খাজনা মওকুফ করে দেয়।
‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।’
আওয়ামী লীগ সরকার কৃষক ও কৃষিবান্ধব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। পরবর্তীকালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার বাংলাদেশকে আবারও খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে। কিন্তু বর্তমানে ফসলের জাত, প্রযুক্তি ও কৌশল উদ্ভাবনের ফলে দেশের কৃষি নতুন মাত্রা পেয়েছে। দেশের কৃষি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
‘বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। এখন বিদেশে চাল রফতানি হচ্ছে। দেশের কৃষি খাতে সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে কৃষক লীগের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। কৃষক লীগ ১৯৮৫ সাল থেকে দেশব্যাপী ১লা আষাঢ় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে।’
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম ও ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কৃষকসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ১৮ জন কৃষক ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এফএইচএস/এমএমএ/এমএস