ভবিষ্যতে জাতি যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে এমনভাবে ধরে রাখতে হবে যেন ভবিষ্যতে জাতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায়। সারা দেশে জেলা-উপজেলায় অামরা মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স গড়ে তুলছি। এখানেও ছোট্ট পরিসরে হলেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে।
অাজ রোববার সকালে রাজধানীর অাগারগাঁওয়ে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থায়ী ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে শুরু করেছিলাম অাজ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবনের উদ্বোধন করতে পেরে অামি গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তৈরিতে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অাগস্ট জাতির জনককে হত্যা করাটা কোনো পরিবারের উপর অাঘাত ছিল না বা একটি পরিবারকে ধ্বংস করার লক্ষ্য ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলা। স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনা এবং সৃষ্টিকে ধ্বংস করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে জিয়া (জিয়াউর রহমান) ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। ১৯ বার ক্যু হয়েছে এই বাংলাদেশে। দিনের পর দিন কারফিউ দিয়ে দেশ চালিয়েছে। ৫৬২ জন মুক্তিযোদ্ধা সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। এ অবস্থায় কেউ কেউ অাবার জিয়াকে বাহবা দিয়ে তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণহত্যাকারী, মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, নারী নির্যাতনকারী ও সাত খুনের অাসামিদেরও জেল থেকে মুক্তি দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে জিয়া। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরও বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে জিয়া। স্বাধীনতাবিরোধী যতো শক্তি ছিল তাদের প্রত্যেককে কোনো না কোনোভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
‘অথচ মুক্তিযোদ্ধারা না খেয়ে জীবনযাপন করলেও তাদের খবর নেয়নি। রাজাকার অাল বদর অাল সামসদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে রক্তে রঞ্জিত পতাকা তুলে দিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান্বিত করেছে।’
তিনি বলেন, বিরোধী দলে থেকে ভেবেছি এবং অামাদের ওয়াদা ছিল অাল্লাহ যদি সুযোগ দেয় তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অামরা করব। অাজ তাদের বিচার হয়েছে। জাতি হয়েছে কলঙ্কমুক্ত।
অনষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা। এরপর পবিত্র কোরঅান, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি জিয়া উদ্দীন তারেক অালী।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী অা ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠনে অারো বক্তব্য দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী অাসাদুজ্জান নূর। জাদুঘরের অারেক ট্রাস্ট্রি কবি রবিউল হোসাইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সমন্বিত ছবি উপহার দেন।
এফএইচএস/জেডএ/পিআর