বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালিদের ধাওয়া
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসি বাঙালিদের এক অনুষ্ঠান থেকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে। বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সেক্রামেন্টোতে এ ঘটনা ঘটে।
রাশেদ চৌধুরী জাতির জনক হত্যাকাণ্ডে আদালতের দণ্ড নিয়ে অনেক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছেন । তাকে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকার তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেক্রামেন্টোর একটি লাইব্রেরিতে বাংলা বর্ষবরণের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া করছিল শিশু-কিশোররা। অনেকের বাবা-মাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাশেদ চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হলে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু নাসের রাজীব চিনতে পেরে তার দিকে তেড়ে যান। এতে ভয় পেয়ে ওই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।
জাতির জনকের খুনিকে দেখে নিজের মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি বলে গণমাধ্যমকে জানান আবু নাসের রাজীব।
তিনি বলেন, “আমি আবারও বঙ্গবন্ধুর এই খুনিকে কোথাও দেখলে তাকে তাড়া করব।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর সেই সময়ের বিপথগামী কয়েকজন কর্মকর্তা পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে হত্যা করে। বাংলাদেশের উচ্চ আদালত এই হত্যামামলায় রাশেদ চৌধুরীসহ ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। ২০১১ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের ফাঁসিও কার্যকর করা হয়।
এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরী ১৯৯৬ সালে পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য আবেদন করেন বলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, রাশেদ চৌধুরী ও তার পরিবারের অতীত কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য রেখে ওই আশ্রয়ের আবেদন যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে অনুমোদন করেছিল। এরপর থেকে রাশেদ দেশটির বিভিন্ন স্থানে নিজের অবস্থান পাল্টিয়ে আসছিলেন। বর্তমানে তিনি সেক্রামেন্টো থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরের কন্ট্রা কস্তা কাউন্টির কনকর্ড শহরে নিজের ছেলের সঙ্গে থাকেন বলে জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত না থাকায় বর্তমানে রাশেদ চৌধুরী কিভাবে বা কী ধরনের ভিসা নিয়ে দেশটিতে অবস্থান করছেন, তা জানা যায়নি। বাংলাদেশ সরকার তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো অপরাধী প্রত্যার্পন চুক্তি না থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি।
এসআরজে