মাইকিং করে সমাবেশের ডাক ট্যানারি শ্রমিকদের
রাজধানীর হাজারীবাগে ট্যানারি এলাকায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ দেয়ার দাবিতে সোমবার (১০ মার্চ) সমাবেশের ডাক দিয়েছেন ট্যানারি মালিক ও শ্রমিকরা।
রোববার হাজারীবাগ এলাকায় মাইকিং করে এমন সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। সকাল থেকে পুরো এলাকায় দুটি মাইক দিয়ে এ ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
মাইকে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী ট্যানারি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ এবং হাজারীবাগের ট্যানারিতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে সোমবার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। হাজারীবাগের ঢাকা ট্যানারি মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে ট্যানারি মালিক, শ্রমিক, কেমিক্যাল ব্যবসায়ীসহ এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে সব ধরনের দোকান-পাট বন্ধ থাকবে। হাজারীবাগের শাহজাহান ট্যানারি মোড় থেকে সমাবেশ শুরু হবে।
এদিকে, এ সমাবেশকে ঘিরে রোববার সকাল থেকেই হাজারীবাগ ট্যানারি মোড়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। মিছিলে নারীসহ কয়েকশত শ্রমিক অংশ নেন। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ট্যানারি নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তারা গ্যাস ও বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবি জানান।
মিছিলের পাশপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দু’টি গাড়িতে পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে।
শ্রমিকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবারের জনসভার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন অনেক মালিক। তারা সমাবেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতির চিন্তা-ভাবনা করছেন। শ্রমিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সমাবেশে উপস্থিত থাকতে। সমাবেশ থেকে শক্তি জানান দিতে পারলে এরপর ট্যানারি স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা করবেন। সমাবেশে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ জড়ো করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পরিবেশ অধিদফতর। ট্যানারি মোড়, মনেশ্বর রোড, ঢাকা ট্যানারি মোড় ও বেধিবাঁধ মোড় এলাকাকে এ চারটি অঞ্চলে ভাগ করে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে ১২৩টি টেলিফোন সংযোগ, ১৯৩টি পানির লাইন, ২২৪টি বিদ্যু সংযোগ ও ৫৪টি তিতাসের গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। ট্যানারির এসব সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার পর সব ধরনের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে হাজারীবাগে। শ্রমিকরা কোনো কাজ করছেন না। ফলে কর্মহীন হয়ে সকালে তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছেন।
এ বিষয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখনো সাভারে সিইটিপি, ইটিপি, গ্যাস সংযোগসহ কিছুই করা হয়নি। শ্রমিকদের বাসস্থান ও চিকিৎসা সেবার কিছুই নেই। অথচ একে আধুনিক শিল্পনগরী বলা হচ্ছে। শ্রমিকরা সেখানে গেলে থাকবে কোথায়?’
সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ (রোববার) বিকেলে মিটিং হবে। মিটিংয়ে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। তা আগামীকাল সমাবেশে ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সাভার এখনো ট্যানারির জন্য প্রস্তুত হয়নি। আগামীকাল সোমবার সমাবেশ করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি জানিয়ে দেয়া হবে। কী ধরনের কর্মসূচি হবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিকেলে সবার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত ৩০ মার্চ এক আদেশে ৬ এপ্রিলের মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানাগুলোর সব কার্যক্রম বন্ধ করার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এমএসএস/জেডএ/এসআর/এমএস