ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চোখের সামনে এখনো ভাসে মরদেহ

প্রকাশিত: ১০:১৯ এএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

প্রাণপণ চেষ্টা করেছি ভাই। তারপরও হতভাগিনী শাহিনাকে বাঁচাতে পারিনি। আমাদের শত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন শাহিনা। রানা প্লাজা ধসের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহত শ্রমিকদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদির পাশেই এই কথাগুলো বলছিলেন উদ্ধারকর্মী জাজ মিয়া রুবেল। পেশায় একজন ট্যাক্সি চালক রুবেলও স্বজনদের মতোই আজ স্মৃতিকাতর।

তিনি জানান, শাহিনাকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন আমাদের সঙ্গী কায়কোবাদ ভাই। অল্পের জন্য সেই আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছি আমি। কিন্তু সেই স্মৃতি মনে পড়লেই আর ঠিক থাকতে পারি না।

সেই দিনের বর্ণনা তুলে ধরে রুবেল বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। পিছনে তাকিয়েই দেখি ধসে পড়েছে রানা প্লাজা। নয়তলা ভবনটি দুমড়ে-মুচড়ে দুই তলা হয়ে গেছে। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। ছুটে যাই ধসে পড়া ভবনের কাছে। কিন্তু অনেকটাই অসহায় ছিলাম। কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। সেসময় অন্য কয়েকজনের সাহায্য নিয়ে একটি বিরাট দেয়াল সরালাম। ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় বের করে আনা হলো আটকে পড়া কয়েকজন শ্রমিককে। এভাবে প্রথম দিনেই অন্তত ৭০ জনকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছি। তবে এদের কেউ জীবিত ছিলেন আবার কেউ মৃত।

স্মৃতিকাতর অবস্থায় রুবেল বলেন, এখনো চোখের সামনে সেই বিভীষিকার ছবি ভেসে ওঠে। চোখের সামনে এখনো ভাসে মরদেহ। চারদিকেই রক্ত। এখনো ঘুমাতে বড় কষ্ট হয়।

ধসে পড়ার পরপরই নিবেদিত হয়ে কাজ করতে থাকেন সব উদ্ধারকর্মী। কারো কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না। ছিল শুধু সাহস। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সরকারি বাহিনীর তুলনায় সাধারণ মানুষ বেশি ঝুঁকি নিয়ে ভবনের ভেতরে গেছেন।

যান্ত্রিক উদ্ধার তৎপরতা আরও কিছুদিন পরে শুরু হলে হয়তো আরও কিছু মানুষকে জীবিত ফিরে পেতেন তাদের পরিবার- সেই দাবি করেন রুবেল।

এমজেড/বিএ/পিআর