তিস্তা চুক্তি ‘চূড়ান্ত’ তবে কবে জানেন না মন্ত্রী
পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে তা কবে হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পানি দিবস- ২০১৭’ উদযাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রীকে এ সময় প্রশ্ন করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হচ্ছে কিনা। প্রসঙ্গত, ৭ এপ্রিল চারদিনের সরকারি সফরে ভারতের নয়াদিল্লি যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ভারত যাচ্ছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তির জোর দাবি তোলা হবে। বিপরীতে ভারত চাইবে একটা বড় ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তি। তবে দুটি চুক্তির ব্যাপারেই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
তিস্তার পানির সুষম বণ্টন বাংলাদেশের ১৮ বছরের দাবি। এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়নি। তিস্তা পানিচুক্তির ব্যাপারে গত ১৮ বছর ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু এ পানিচুক্তি করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সম্মতি ছাড়া কেন্দ্র সরকার চুক্তিটি করতে পারবে না।
২০১১ তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে অনেকটা এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত চুক্তি করতে পারেনি দুই দেশ। মমতার বিরোধিতায় তা বাতিল হয়ে যায়। ওই সমঝোতায় তিস্তা নদীর পানি ৫০:৫০ এ ভাগ করার কথা ছিল। ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি চুক্তিতেও একই বিষয়ের উল্লেখ ছিল।
পানি দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আরও বলেন, ‘ভারতের দুই পাশে বাংলাদেশের অবস্থান। তাই ভারতের সঙ্গে ১৯৯৮ সালে হওয়া গঙ্গা চুক্তির মাধ্যমে গঙ্গা নদীর উপর ব্যারাজ তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। এতে আমরা সহজেই পানি সংরক্ষণ করতে পারব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগে নদী রক্ষা ও পানি সংরক্ষণের কথা ভাবতাম না। তাই দেশে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে সুপেয় পানি ভূগর্ভের অনেক নিচে নেমে গেছে। এ কারণে আমরা ভূ-উপরিস্থ থেকে পানি সংরক্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছি।’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৪টি নদী শনাক্ত করা হয়েছে। এসব নদী উদ্ধার ও খননের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে জলাধার তৈরির কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের নদীর পানি দূষণমুক্ত ও খাল-বিল উদ্ধার করা হচ্ছে। এজন্য একটি আইনও তৈরি করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দেশের নৌপথ বাড়ানো হচ্ছে। নদী-খালের পানি সেচ কাজে ব্যবহারে সরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এ মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বৃদ্ধির চিন্তা-ভাবনা চলছে।’
‘ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎস আর করো না শেষ, ভূ-উপরিস্থ পানিতে বাঁচবে বাংলাদেশ’- এ প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব পানি দিবস- ২০১৭’। এ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে সকালে একটি র্যালি বের হয়। পরে তা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।
এমএইচএম/এমআরএম/এমএআর/পিআর