ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘জানলা দিয়া চাইহা দেহি সব শ্যাষ’

প্রকাশিত: ০৪:১১ এএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

জসীম উদ্দীন, বৌবাজার থেকে : ‘দুপুরে খাইয়া অপিসে গেছি। অপিসে কাজ শুরু কইরাই ম্যানেজার আইসা কইলো তোমরা কে কে ঝিলপাড় থাকো। সে কথা শুইন্না জানালা দিয়া দেখি আমার সব শ্যাষ। চোখের সামনে দেখলাম সব ডাইব্বা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে চোখের পানি মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন নাসরিন বেগম (৩৫)।

নাসরিন বেগমের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। স্বামী খোকনের সঙ্গে দেবে যাওয়া এ বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন তিনি। কাজ করতেন ওভারসিস নামে একটি স্থানীয় গার্মেন্টেসে।

বুধবার দুর্ঘটনায় যে কয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয় তার মধ্যে নাসরিনের বোন ও স্বামীর ভাই (ভাসুর) রয়েছে।

রাজধানীর রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়ার বৌবাজার এলাকায় গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে একটি টিনসেড বাড়ি দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ খবর অুনযায়ী এ দুঘর্টনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। ভেঙ্গে পড়া ওই অস্থায়ী বাড়িটির নিচে আরও কেউ চাপা পড়েছেন কি না তার খোঁজে দমকল বাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে কথা হয় ভাড়াটিয়া নাসরিনের সঙ্গে। তিনি জানান, ভাসুর, বোন আর ননদসহ সাতজন মিলে ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। দুর্ঘটনায় স্বামীর বড় ভাই মারা গেলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন তার স্বামী। দুই তলার ঘরটি দেবে যাওয়ায় চাপা পড়ে তার স্বামী খোকন, ছোট বোন রুনা(১৮) ও জাকির (৪৫)। তবে তার স্বামী কোনো রকমে জীবন বাঁচাতে পারলেও পারেন নি ছোট বোন রুনা ও জাকির।

নাসরিন বলেন, আমার স্বামীর কাইল (বুধবার) ছিল ছুটি। এক সঙ্গে খাইয়া আমি গার্মেন্টেসে চইল্লা যাই। আড়াইটার দিকে আমি অপিসে পৌছাই কাজ শুরু করি। কিছুক্ষণ পরে ম্যানেজার আইসা কয় ঝিলপাড়ের একটি বাসা দেবে যাচ্ছে।

নাসরিন বলেন, ভাইয়া রে, কিভাবে চোখের উপর সব শ্যাষ হয়ে গেল। শুধু অপিসের জানলা দিয়া চাহিয়া থাকলাম। কিছু করতে পারি নাই।

নাসরিনের স্বামী খোকন বলেন, ঘটনার পর থেকে বাড়ির মালিক মনিরুজ্জামান পলাতক। দুই তলার ওই বাসাটির ম্যানেজার আরাফাত রহমানেরও মা মেয়ে মারা যাওয়ায় তিনিও গ্রামের বাড়িতে।

জেইউ/এএইচ/এআরএস/পিআর