৭০ শতাংশ ভোক্তারই জানা নেই অধিকার
বাঁচার তাগিদেই ভোগ। ভোগের জন্যই পণ্য বা সেবা ক্রয় করা। আর এই পণ্য বা সেবা কিনেই মানুষ ঠকছে নিত্যদিন। ঠকছে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত। দিন যাচ্ছে, বঞ্চিত মানুষের পাল্লা ভারী থেকে আরও ভারী হচ্ছে। অগণিত মানুষ রোজ রোজ বঞ্চিত হলেও এ থেকে নিস্তারের যেনো কোনোই উপায় নেই।
নাগরিকের অধিকার নিশ্চিতকল্পে ভোক্তা অধিকার আইন করা হয়েছে। রয়েছে পৃথক অধিদফতরও। তবে ভোক্তা অধিকারের আইন যেনো নামেমাত্র। কাগজে-কলমেই বন্দি এর সব কার্যক্রম। ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে লোক দেখানো কিছু করে দেখানোই যেনো অধিদফতরের সীমাবদ্ধতা।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর বলেন, এখনো প্রায় ৭০ শতাংশ ভোক্তা তার অধিকার সম্পর্কে জানেন না। এ কারণে অনেকে প্রতারিত হওয়ার পরও চুপ করে বসে থাকে। অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ভোক্তা রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া ভোক্তারা অভিযোগ করলে দ্রুত সময়ে তা সমাধান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়াতে অধিদফতর সভা সমাবেশ ও সেমিনার করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন বাজার ও দর্শনীয় স্থানে পোস্টার সন্নিবেশ করাসহ টিভি চ্যানেলে প্রচারণামূলক কর্যক্রম করছে। যার কারণে ভোক্তাদের দিনদিন সচেতনতা বাড়ছে। ফলে অধিদফতরে অভিযোগও বাড়ছে।
বেসরকারি সংস্থা কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাদের হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য আইন আছে। যথাযথ বাস্তবায়ন নেই।
আমারা কোনো ক্ষেত্রেই শতভাগ সেবা পাই না উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য আমরা হাসপাতালে গেলে ঠিকমতো সেবা পাই না। ওষুধ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। তারা বলছে ওষুধ নেই। কিন্তু প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে ঠিকই বাজেট নিচ্ছে। এ রকম সব খাতেই একই অবস্থা। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতরসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থাকলেও তেমন সুফল পাচ্ছে না জনগণ। রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকার পরও দায়সারা কাজ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
১৫ মার্চ (বুধবার) বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ভোক্তার আস্থাশীল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ি।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন দেশে কার্যকর করা হয়। গঠন করা হয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪ হাজার ৬৫২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭ কোটি ৭৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ হারে জরিমানাকৃত অর্থের চার কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার টাকা অভিযোগকারীদের দেয়া হয়। আর অর্থের অন্য অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।
ভোক্তা সংজ্ঞার ব্যাখ্যায় কোনো পণ্য বা সেবাগ্রহিতা নগদ, বাকি, আংশিক মূল্য অথবা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের চুক্তিতে যে বা যিনি পণ্য কিনবেন তিনিই ভোক্তা।
ভোক্তা আইনে কেউ পণ্য বা সেবা ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে উদ্ভূত ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কিংবা উল্লিখিত জেলা পর্যায়ের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের বরাবর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। তিনি সাদা কাগজে লিখিত অথবা ই-মেইল, ফ্যাক্স অথবা টেলিফোনে প্রমাণসহ নিজ পরিচয় দিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। এ আইনের সবচেয়ে ভালো দিকে হচ্ছে : ১. অভিযোগ দায়ের করতে কোনো কোর্ট ফি দিতে হয় না। ২. দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আরোপিত ও আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয়।
এসআই/এমআরএম/এআরএস/আরআইপি
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ লেখাপড়ায় মনোযোগ দেন, প্রয়োজনে আবারও রাস্তায় নামবো
- ২ ৩৭ বছর পর চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে প্রকাশ্যে শিবির
- ৩ ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ সপ্তাহে, ক্যাডার-ননক্যাডারে পদ ৩৭০১
- ৪ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ, ওষুধে ব্যয় ২০ শতাংশ
- ৫ জাপান গার্ডেন সিটিতে বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার অভিযোগে থানায় জিডি