ইসলাম জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে, এ ধারণা ঠিক নয় : গুনারত্নে
কেউ যদি বলে ইসলাম জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে তাহলে আমি বলবো শ্রীলঙ্কাকে দেখ। এখানে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তামিল ও হিন্দুরা জড়িত। ইসলাম জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে, এই ধারণা ঠিক নয়।
রোববার চিফস অব পুলিশ কনফারেন্সে এসব কথা বলেন সিঙ্গাপুরের নানীয়াং টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেরোরিজম রিসার্চ-এর অধ্যাপক ড. রোহান গুনারত্নে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সবাই ইসলামের নাম জড়ায়। অথচ বিশ্বে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, তামিল, খ্রিস্টানসহ নানা ধর্মাবলম্বী জঙ্গি ও সন্ত্রাসী রয়েছে।
বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ নিয়ে রোহান গুনারত্নে বলেন, গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় যে হামলা হয়েছিল, সেটা নব্য জেএমবি নয় বরং ইসলামিক স্টেটস (আইএস) করেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে আইএসকে নব্য জেএমবি বলা হচ্ছে। আইএসের উত্থান ইরাক এবং সিরিয়া হতে পারে তবে বাংলাদেশেও আইএসের অনুসারী রয়েছে। যারা আগে জেএমবি ছিল এখন তারাই আইএস।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সবাই টেরোরিস্টদের ক্রিমিনাল মনে করে। কিন্তু এই দুটা শব্দ আলাদা। ক্রিমিনালরা অপরাধের পর পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু টেরোরিস্টরা নেগোশিয়েট করে না- মৃত্যুবরণ করতে আসে। আর্টিসানের হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছিল টেরোরিস্টরা। তাই বাংলাদেশ পুলিশের উচিত ছিল কমান্ডো বাহিনীর জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা না করে শুরুতেই অভিযান করে জঙ্গিদের প্রতিহত করা।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে গুনারত্নে বলেন, এ ধরনের অপরাধীদের জেলখানায় পাঠানোর আগে রিহ্যাবিলেট করতে হবে। তাদের ধর্ম সম্পর্কে সুষ্ঠু জ্ঞান ও শিক্ষা দিতে হবে। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটতে থাকবে।
প্রফেসর রোহান গুনারত্নে তার আলোচনায় জঙ্গি দমনে সক্ষমতার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রশংসা করেন। পৃথিবীতে বর্তমানে বিরাজমান তিন ধরনের হুমকির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হুমকি, দ্বিতীয়ত সন্ত্রাসবাদীদের হুমকি এবং তৃতীয়ত ভাবাদর্শগত উগ্রপন্থীদের হুমকি।
রোববার সকাল ১০টায় সোনারগাঁও হোটেলে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠানে কনফারেন্সের প্রথম দিন ‘বাংলাদেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান’ শীর্ষক প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। এরপরই দ্বিতীয় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গুনারত্নে।
এআর/এনএফ/এমএস