দক্ষ কর্মী তৈরিতে সহায়তা দেবে জাপান
দক্ষ কর্মী তৈরিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে জাপান। এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে নেয়া টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রশিক্ষণের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে দেশটির সরকার।
রোববার এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে জাপানের ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএম)। জাপানের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই চুক্তির আওতায় আমাদের কর্মীরা জাপানে যাবে। প্রয়োজন অনুযায়ী জাপানে কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এ বছরই অনেক কর্মী যাবে। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের ১৩৩টি ট্রেডের আওতায় যত পারে তত কর্মীর নেবে জাপান।
এর আগে শিক্ষানবীশ এসব কর্মীদের বেতন ১১০০-১২০০ ডলার নির্ধারিত হয়েছিল। এখনো সেটাই নির্ধারিত আছে। জাপানে এখন প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রবাসী কল্যাণ সচিব শামছুন্নাহার, অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, আজহারুল হক, প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা প্রমুখ।
জাপানের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আইএম জাপানের সিইও কিওই ইয়ানাগিসাওয়া। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আইএম জাপান বিভিন্ন দেশ থেকে সাত হাজার ৫০০ জন শিক্ষানবীশ কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
কিওই ইয়ানাগিসাওয়া জানান, বাংলাদেশ থেকে নেয়া শ্রমিকদের পাঁচ বছর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পরে দেশে ফিরে তারাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, জাপান দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে দেশটির নির্মাণ ও উৎপাদনমুখী শিল্পের জন্য জাপান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কারিগরি প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে থাকে।
বিশেষ করে ২০১১ সালের সুনামি পরবর্তীকালে অবকাঠামো পুনঃনির্মাণ এবং ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে জাপানে প্রচুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে আইএম জাপান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কারিগরী প্রশিক্ষণার্থীদের তিন বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। নতুন চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের কর্মীরা পাঁচ বছর জাপানে থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রশিক্ষণার্থীরা ম্যানেজার, সুপারভাইজার পদেও কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষণকালীন তাদের উচ্চ সম্মানী দেয়া হবে। সেই সঙ্গে দেশে ফিরে আসার সময় এককালীন কিছু পুঁজিও দেয়া হবে।
২০১২ সালের জানুয়ারিতে জাপানের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পদে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেয়ার ব্যাপারে ‘জাপান ইন্টারন্যাশনাল টেকনিক্যাল কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’- জিটকোর মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়।
ওই সময় জিটকোর দুই প্রতিনিধি ঢাকায় এসে একটি চুক্তিও করেন। পোশাক খাতের ২৪ নারী কর্মী সেসময় জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে যাওয়ার সুযোগ পান। পরে বেশকিছু চাহিদাপত্র এলেও অনিয়মের অজুহাতে জাপান দূতাবাস ভিসা প্রদান বন্ধ রাখে।
জেপি/এমআরএম/এনএফ/এমএস