সমুদ্র সহযোগিতা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রস্তাব করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন সামিটে ‘একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য রিম সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদারকরণ’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্ক অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে প্রধামনমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে মহাসাগর ও সমুদ্রপথ উন্নয়নের মাধ্যমে রিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালানো। আসুন সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করি। আসুন একসঙ্গে তরী ভাসাই।’
আইওআরএ নেতৃবৃন্দের প্রতি সমুদ্রগামী নাবিকদের নিরাপত্তা এবং পেশাগত অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দক্ষতা এবং নিবেদিত কার্যপ্রনালী কখনো কখনো অনাকাঙ্খিত পরীক্ষার সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এর সমুদ্র সম্পদ টেকসইভাবে ব্যবহারের ওপরই ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সামাজিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
তিনি বলেন, এ জন্য আমরা এসডিজি-১৪ কে আমাদের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করেছি এবং সমুদ্র অর্থনীতির দিকে আমাদের মনসংযোগকে নবায়ন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী সমুদ্রসীমানা নিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিরোধ মীমাংসাকে অর্থনৈতিক সম্ভবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা এ বিষয়টিতে সম্পূর্ণভাবেই অবগত যে, সমুদ্র এলাকার সম্পদ আহরণের সামর্থের ওপরই আমাদের এই সাফল্য নির্ভর করছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের এবং সমুদ্র ও সামুদ্রিক শিল্পের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমন্ডলীয় শক্তি ব্যবহার করে নবায়নযোাগ্য জ্বালানি উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। তবে, আমরা শুধু অবকাঠামোগত যোগাযোগই নয় চিন্তা-চেতনা, উদ্ভাবন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং পর্যটন ক্ষেত্রে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে মানসিক যোগাযোগও স্থাপন করতে চাই। বিশেষ করে মানবীয় যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৭ মার্চ বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় একটি দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ বাংলাদেশের আপামোর জনসাধারণকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করে।
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং বাংলার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরএস/এমএস