বগুড়ায় শাস্তি : বিভিন্ন মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তির প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। শনিবার সকাল ১০টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মুশফিকুজ্জামান আকন্দ জানান, দুই দফা দাবিতে তারা ধর্মঘটে নেমেছেন।
দাবিগুলো হলো, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তি প্রত্যাহার করে তাদের নিজেদের কর্মস্থলে বহাল রাখা এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা প্রদান।
এই দাবি আদায় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তারা কাজে যোগ দেবেন না। একই দাবিতে দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মানববন্ধন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. দেবপদ রায় বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারে আলোচনা চলছে। অন্তত জরুরি বিভাগের সেবা অব্যাহত রাখতে তাদের আমরা অনুরোধ করেছি। এছাড়া অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গেও আমরা বসেছি। যাতে হাসপাতালের সেবা ব্যাহত না হয়।
এদিকে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বেলা ১১টা থেকে ১২ পর্যন্ত ইন্টার্নি চিকিৎসকরা মানববন্ধন করেন। এরপর সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইন্টার্নি চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহফুজুল হক রাকিব, সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল বারি বাধন, ডা. সুলতান আরেফিন, ডা. শাহনাজ নাজনিন, ডা. রাশেদ মিজান রবি, ডা. শাহানা শোভা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা সব সময় মানবসেবায় নিয়োজিত থাকি। রাতদিন এক করে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। কিন্তু বগুড়ায় আমাদের সহকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আবার তাদেরই শাস্তি দেয়া হয়েছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছি। এরপরও যদি ৪ ইন্টার্ন চিকিৎসকের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা না হয় তবে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় কর জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে রোগীদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কারণ চিকিৎসকদের বাড়তি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেলা ১২টার দিকে কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি মওকুফ করা না হলে তাদের এই কর্মবিরতি চলবে।
অন্যদিকে, রাজশাহী ও রংপুর মেডিকেল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবা। ভোগান্তিতে পড়েছে চিকিৎসক ও তাদের স্বজনরা।
সম্প্রতি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে ‘আপা’ বলে ডাকায় সিরাজগঞ্জের কোনাগাতির আলাউদ্দিন সরকার নামের এক রোগীর ছেলে আবদুর রউফকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় শজিমেক শাখার সভাপতি ডা. এমএ আল মামুন, সহ-সভাপতি ডা. আশিকুজ্জামান আসিফ, সাবেক সহ-সভাপতি ডা. কুতুব উদ্দিন ও ডা. নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। সেই সঙ্গে শাস্তি শেষে তাদের চারটি ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে বলে ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমএস