গাবতলী ছাড়তে পারছে না কোনো পরিবহন
পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা। জরুরি প্রয়োজনও বুঝতে চান না শ্রমিকরা। গাবতলী বাস টার্মিনাল পার হতে দেয়া হচ্ছে না কোনো পরিবহনকেই। শ্রমিকদের বাধায় বাদ পড়েনি ভাড়ায় চালিত লোকাল বাস, যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস এমনকি পিকআপ ভ্যানও। শ্রমিকদের ধর্মঘট ঘোষণার পর সরেজমিনে কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদসহ পাঁচজন নিহতের মামলায় বাসচালক জামির হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা খুলনার সড়কগুলোতে ছোট যান চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীরা অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। এ ধর্মঘটে যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার ঘোষণার পর হঠাৎ নতুন করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা জাগো নিউজকে জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়নি, বিভাগীয় কমিশনারের অনুরোধে শুধুমাত্র খুলনা জেলায় কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। বাকি ৯ জেলায় ধর্মঘট চলছিল।
তবে রাত ৯টায় ঢাকায় মালিক সমিতি এবং শ্রমিক নেতাদের কেন্দ্রীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যৌথ বৈঠকেই দেশব্যাপী ধর্মঘট কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। হানিফ পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা বাবুল মিয়া জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহার হলে পুনরায় বাস চলাচল শুরু হবে। রংপুর রুটের যাত্রী ঈশিতা চক্রবর্তী জানান, সন্তান নিয়ে যাব বাবার বাড়ি। কিন্তু হঠাৎ ধর্মঘটের মুখোমুখি হবো ভাবিনি। ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে বিপদেই পড়তে হবে।
কল্যাণপুরে একই অবস্থা নাবিল, শ্যামলী, এসআর ও আগমনী বাস কাউন্টারে। নেই কোনো টিকিট বিক্রেতা। গাবতলী বাস টার্মিনালে ঢোকার আগে টেকনিক্যাল হতে দেখা যায় মানুষের ভোগান্তি। হেঁটেই রওনা দিয়েছেন সাভার কিংবা আমিনবাজারের মতো নিকট দূরত্বের যাত্রীরা। এছাড়া মিরপুর, পল্লবী, ভাষানটেক এলাকার যাত্রীরাও হেঁটেই যাচ্ছেন গন্তব্যে।
গাবতলী টার্মিনালের ফটকের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মঘটে রাস্তায় বেরিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ভাড়ায় চালিত অন্য পরিবহনে উঠেও স্বস্তিতে নেই যাত্রীরা। কোনো রুটের পরিবহনকে গাবতলী ব্রিজ পার হতে দিচ্ছে না শ্রমিকরা। ভাড়ায়চালিত যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান এমনকি লোকাল বাস আটকে যাচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের বাধায়।
এদিকে আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে ধর্মঘট এবং কর্মবিরতি পালন করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত আদালত অবমাননার শামিল। সরকার এবং বিচার বিভাগকে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রাজশাহীর যাত্রী নিশাদ বলেন, রাজশাহীতে যাব একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে। কিন্তু এমন বিপত্তিতে পড়ব ভাবিনি। এমন ধর্মঘট তো আদালত অবমাননার সামিল। দেখার পালা এবার আদালত কেমন শাস্তিমূলক নির্দেশনা দেয়।
শ্যামলী পরিবহনের উত্তরবঙ্গ রুটের ম্যানেজার জাগো নিউজকে বলেন, চালকরা চাবি জমা দিয়েছেন। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত দিবেন না বলেছেন।
বাস ট্রাক ওনার্স গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন জানান, আমাদের চেষ্টায় তো কাজ হবে না। চালকরা গাড়ি না চালালে তো ধর্মঘট এমনিতেই হয়ে যায়।
পরিবহন নেতা তাজুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদসহ ৫ জন নিহতের মামলায় বাসচালক জামির হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পূরণ না হলে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে না। কোনো চালক গাড়ি চালাতে গিয়ে মানুষ মারতে চান না। অনাকাঙ্খিত ঘটনায় একজন চালকের এমন শাস্তি অগ্রহণযোগ্য।
জেইউ/ওআর/পিআর
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষদিন সোমবার, প্রার্থীদের যেসব তথ্য জরুরি
- ২ তীব্র শীতে নিউমার্কেটে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের বাজার
- ৩ মিয়ানমারে ডিজেল-সিমেন্ট পাচারকালে বঙ্গোপসাগরে নৌকাসহ আটক ১১
- ৪ চট্টগ্রামের টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজন নগর সরকার: মেয়র শাহাদাত
- ৫ তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে তামাকবিরোধী জোটের অভিনন্দন