ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কামারুজ্জামানের সঙ্গে মোলাকাত করতে চান ছেলে ওয়ামি

প্রকাশিত: ০৮:৩৬ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০১৫

“কারা কর্তৃপক্ষের চিঠির প্রেক্ষিতে কারাগারে এসে বাবা কামারুজ্জামানের সাথে দেখা করতে পারলেও মোলাকাত হয়নি। এটাই যদি শেষ দেখা হয় তবে তা হবে কষ্টের। তাই আমি আমার বাবার সাথে পুনরায় দেখা করে মোলাকাত করতে চাই।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে আবারও দেখা করার ইচ্ছে পোষণ করে কথাগুলো বলছিলেন ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি। বুধবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি জানান, তারা আবারও পারিবারিকভাবে দেখা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদন করবেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এ আবেদন করা হবে।

হাসান ইকবাল ওয়ামি বলেন, ‘আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদনের রায়ের পর কারা কর্তৃপক্ষের চিঠির মাধ্যমে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়। এ প্রেক্ষিতে আমরা সোমবার সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে দেখা করেছি। তবে মোলাকাত করতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘মাঝখানে লোহার রডের ব্যারিকেড ছিল। এ কারণে শেষবারের মতো বাবার সঙ্গে বুক মেলানোর সৌভাগ্য হয়নি। এটাই যদি শেষ দেখা হয়, তবে আফসোস থেকে যাবে যে বাবার সঙ্গে মোলাকাত না করতে পারলাম না। তাই আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে সরাসরি সাক্ষাত চেয়ে আবেদন করব।’

অপরদিকে কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা আবারও দেখা করতে চান বলে জানা গেছে। রিভিউ আবেদন খারিজ করে ফাঁসি বহাল রেখে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন; সে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর কামারুজ্জামানের সাথে আবারও দেখা করতে চান আইনজীবীরা।

কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘না, আমরা এখনো পুর্নাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পাই নি। রায়ের কপি হাতে পেলে কামারুজ্জামানে সঙ্গে দেখা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হবে।’

বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী সাংবাদিকদের বলেছেন, তার বাবা আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আবারও তার সঙ্গে সাক্ষাত চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। মহামান্য বিচারকগণের স্বাক্ষরিত রায়ের কপি কারা কর্তৃপক্ষ হাতে পেলে আমরা কামারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগর চেষ্টা করবো।’

রায় প্রকাশের পর গত সোমবার দুপুরে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর পরিবারকে চিঠি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কারাগারে প্রবেশ করে সাক্ষাত করেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে কামারুজ্জামানের পরিবার কিংবা আইনজীবীদের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো আবেদন জানানো হয়নি। আবেদন করুক তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।’

২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।

চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।

২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

জেইউ/বিএ/এমএস