সব পথ যেন মিশেছে শহীদ মিনারে
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি লাখো মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি।
আজ মঙ্গলবার ভোরের সূর্য পূব আকাশে উঁকি দেওয়ার আগেই নীলক্ষেত, আজিমপুর ও পলাশী মোড় হয়ে শহীদ মিনারের দিকে মানুষের ঢল নামে। দল, মত, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে লাখো মানুষ ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর সব পথ যেন মিশেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ভিড়ও বাড়ছে।
১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে মিছিলে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছিল তৎকালীন গোটা পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশ। বাঙালি জীবনে তাই একুশে ফেব্রুয়ারি ফিরে আসে নবজীবনের ডাক নিয়ে। লাখো মানুষ ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি` এই গানের মধ্য দিয়ে প্রভাত ফেরি করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছে আজ।
বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে এসেছেন শ্রদ্ধা জানাতে। নারী-শিশুরাও আছেন এই দলে। একুশের প্রভাত ফেরিতে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষ ও শিশুদের অনেকেরই পরনে বাংলা বর্ণমালা দিয়ে আঁকা পোশাক।
রাজধানীর উত্তরা থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মকিদুর রহমান।
তিনি জানান, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, যাদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি মাতৃভাষার অধিকার তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই শহীদ মিনারে আসা। ফুল আর শ্রদ্ধায় তাদের স্মরণ করছি আজ। আমার সন্তানদের মধ্যেও যেন এই শ্রদ্ধাবোধের সৃষ্টি হয় সে কারণেই তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি।
এর আগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের হাজারো মানুষের ঢল নামে।
এএস/জেইউ/এমএমজেড/এআরএস/পিআর