জেগে থাকা ভালোবাসায় কেটে যায় অাঁধার
ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন সাড়ে ১২টা। ফাগুনের হাওয়া বইছিল মধ্যরাতেও। ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো অারও বেশি সজাগ এবেলায়। বাতিগুলোর সঙ্গী অাজ হাজারও মানুষ।
ভালোবাসার ডালা সাজিয়ে মানুষেরা মিলছে শাহবাগে। ফুল, ফুলের ডালা আর তোরণে তোরণে অন্যরকম এক শাহবাগ। বিনম্র শ্রদ্ধা অার ভালোবাসা সবার চোখে-মুখে।
রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানাবেন বলে শহীদ মিনারের অাশপাশের এলাকা অাটকে দেয়া হয়। কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয় শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, টিএসসি আর পলাশী মোড়ে। এসময় নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া কেউই প্রবেশ করতে পারে না শহীদ মিনারে।
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষেরা অধীর অাগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে এসব এলাকায়। কেউ স্বজনের হাত ধরে, কেউ বা দল বেঁধে এসেছেন শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে।
মধ্যরাতের অপেক্ষা। তবুও যেন মধুময়। জাতীর শ্রষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে কোনোই কার্পণ্য নেই তাদের মাঝে। কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে গল্প করছেন দেশমাতৃকার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। কেউ অাবার গিটার বাজিয়ে গাইছেন দেশের গান, মুক্তির গান। গানে তাল মিলাচ্ছে সব প্রাণ। সব অায়োজনই যেন শহীদদেরর প্রতি ভালোবাসার জন্য, রাতের অাঁধার কাটানোর জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্র দেলাওয়ার হোসেন। বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর মধ্যরাতে শ্রদ্ধা জানাতে আসি। প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানানোর অাবেগই অালাদা। জেগে থাকব সারা রাত।
পরীবাগ থেকে স্বামীর সঙ্গে এসে টিএসসি মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন শামীম অারা। বলেন, দারুণ লাগছে। এমন রাতে ঘরে থেকে অাবেগ প্রকাশ করা যায় না। তাই ওকে সঙ্গে নিয়ে চলে এসেছি। এসবের মধ্য দিয়ে দেশের প্রতি দায় এবং ভালোবাসাও সৃষ্টি হয়।
এএসএস/জেডএ