হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নে অনিয়মের অভিযোগ করবেন যেভাবে
রাজধানী ঢাকার বাসা-বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়ন শুরু করেছে দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন। কর্পোরেশনের এ কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন। এ প্রেক্ষিতে অনিয়মের কোনো অভিযোগ জানানোর অনুরোধ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এজন্য ডিএসসিসিতে চারটি টিম গঠন করা হয়েছে। যে কেউ এই টিমের সদস্যদের কাছে বাসা-বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি বা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ থাকলে তা করতে পারবেন।
জানা গেছে, ৩০ বছর আগের বাসা ভাড়ার ওপর ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাড়ির মালিকরা অনেকগুণ ভাড়া বাড়িয়েছেন। এছাড়া একই এলাকায় পাশাপাশি ভবন হলেও দুই বাড়ির মালিক ট্যাক্স দিচ্ছে দুই রকম। আবার সে সময় যে ভবন ছিল এক বা দোতলা, সেটা এখন ১০ থেকে ২০ তলা হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন থেকে অন্যজনের পার্থক্য ১০ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত বেশি।
আবার কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে ট্যাক্স না দিয়েই কাটিয়ে যাচ্ছেন। আইনি জটিলতা ও ভোটের হিসাব-নিকাশে কোনো মেয়র বা প্রশাসক হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায় আনার উদ্যোগ নেননি। ফলে বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত ছিল সিটি কর্পোরেশন। এ অবস্থায় রাজধানীর বাড়ি মালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয় দুই সিটি কর্পোরেশন। গত বছরের ২ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু এই ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নে নিয়োগ দেয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকর্তারা পুনর্মূল্যায়নে ট্যাক্সের পরিমাণ কম ধরিয়ে দেয়ার কথা বলে বাড়ি মালিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গণমাধ্যমে এরকম সংবাদ প্রকাশের পর ট্যাক্স পুননির্ধারণে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তা সিটি কর্পোরেশনকে জানানোর অনুরোধ করে কর্তৃপক্ষ। এজন্য ইতোমধ্যে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে চারটি টিম করা হয়েছে।
এর মধ্যে অঞ্চল-১ এর ১৫ থেকে ১৯ নং ওয়ার্ডের সদস্যরা হলেন- অঞ্চল-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানাউল হক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মোহাম্মদ নাজমুস শোয়েব, অঞ্চল-১ এর সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয় ও অঞ্চল-৩ এর সহকারী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আসগর।
অঞ্চল-১ এর ২০ ও ২১ এবং অঞ্চল-২ এর ৬, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের জন্য গঠিত টিমের সদস্যরা হলেন- ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা দেবাশীষ নাগ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ, অঞ্চল-১ এর সহকারী প্রকৌশলী নির্মিল চন্দ্র দে ও অঞ্চল-৪ এর সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান।
অঞ্চল-২ এর ১ থেকে ৫ নং ওয়ার্ডের জন্য গঠিত টিমের সদস্যরা হলেন- আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাঈম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন অর রশিদ, অঞ্চল-২ এর সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ও সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন।
অঞ্চল-২ এর ১০ থেকে ১৪ নং ওয়ার্ডের জন্য গঠিত চতুর্থ টিমের সদস্যরা হলেন- প্রধান ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রধান অডিট কর্মকর্তা খাদেমুল করিম, অঞ্চল-৫ এর সহকারী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল ও সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন।
ডিএসসিসি থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে গঠিত এই টিমের সদস্যদের নাম ও পদের সঙ্গে সবার মোবাইল নম্বর দিয়ে ট্যাক্স সমতায়নের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ওয়েবসাইটে গিয়ে এ চার টিমের সদস্যদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে যে কেউ অভিযোগ দিতে পারবেন।
এমএসএস/জেডএ/এমএস