সোমবার বিকেলে সুরঞ্জিতের শেষকৃত্য দিরাইয়ে
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষকৃত্য সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সম্পন্ন হবে। সোমবার বেলা ১১টায় তার মরদেহ নিজ জেলা সুনামগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে। এ দিন দুপুর ১টায় তার নির্বাচনী এলাকা শাল্লা এবং বিকেল ৩টায় দিরাই উপজেলায় তার মরদেহ সাধারণ মানুষের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। অসুস্থ সুরঞ্জিতকে গতকাল রাত থেকেই ল্যাবএইড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। পরে ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসকরা জানান, তিনি আর নেই।
প্রবীণ এই নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার ফুসফুসের সমস্যার জন্য রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে। শনিবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে প্রথমে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। পরে রাতেই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৫ মে। সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে জন্ম নেয়া সুরঞ্জিত ছাত্র জীবনেই বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। হাওরাঞ্চলের ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
প্রবীণ এ পার্লামেন্টারিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। পরে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।
নব্বই দশকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর আগে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও একতা পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী নিযুক্ত হন। যদিও সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর তিনি পদত্যাগ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিপরিষদে রাখেন।
তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ–বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে সব সময় সরব এ সংসদ সদস্য একজন অভিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন এই সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একজন অন্যতম সদস্য।
এইউএ/জেডএ/এমএস