ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অ্যাডভোকেট তাজুলের বিরুদ্ধে শুনানি ৫ এপ্রিল

প্রকাশিত: ০৯:৩১ এএম, ২২ মার্চ ২০১৫

এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের পরে রায় নিয়ে মন্তব্য করায় আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম এবং সংগঠনের পক্ষে হরতাল ডাকার কারণে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের আদালত অবমাননার বিষয়ে শুনানির দিন পিছিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

জামায়াতের পক্ষে সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতের শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কেজয়াদ আল মালুম ও তুরিন আফরোজ। অন্যদিকে তাজুল ইসলামের পক্ষে ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল এবং জামায়াতের পক্ষে মসিউল আলম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আদালত অবমাননার অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আবেদন করেছিল তারা হলেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুর রহমান এবং ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল জব্বার ও সেক্রেটারি জেনারেল মো. আতিকুর রহমান।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের কারণ দর্শানো (শো’কজ) নোটিশের জবাব দাখিল করেন জামায়াত-শিবির নেতাদের পক্ষে তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। ওই হিসেবে আজ উক্ত জবাবের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তাদের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ ওয়াই মশিউজ্জামান শুনানির প্রস্তুতির জন্য সময়ের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন গ্রহণ করে আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে মন্তব্য করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

গত ১২ জানুয়ারি জামায়াত-শিবিরের পাচঁ নেতা এবং অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। নোটিশে কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। ২৮ জানুয়ারি তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

২৮ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। অন্যদিকে জামায়াত-শিবির নেতাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম সময় আবেদন করেন।

গত ১ জানুয়ারি সংগঠন হিসেবে জামায়াত ও তাদের নেতা হিসেবে পাচঁজন এবং আইনজীবী তাজুল ইসলামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছিলেন প্রসিকিউশন। ৫ জানুয়ারি এ অভিযোগের শুনানি নিয়ে ১২ জানুয়ারি আদেশের দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ১২ জানুয়ারির আদেশে জামায়াত বাদে বাকিদের শো’কজ করেন ট্রাইব্যুনাল।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়ের প্রতিবাদে ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি দু’দিনের হরতাল ডাকে জামায়াত। বিবৃতিতে এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নানা বিরুপ কথা বলেন জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা।

অন্যদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজহারের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো’।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় যে সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে তা এক ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলেও মন্তব্য করেন তাজুল।

আজহারের এই আইনজীবী বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ট্রেন থেকে আজহারকে নামতে যে তিনজন দেখেছেন বলে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের কেউ দেখেছেন ৬ কিলোমিটার দূর থেকে, কেউ ৩ কিলোমিটার ও আবার কেউ দেখেছেন দেড় কিলোমিটার দূর থেকে। এসব সাক্ষ্যের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলে আমরা মনে করি।

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, যেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে আজহারুল ইসলামকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, সেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক কাগজপত্র যদি ডাস্টবিনে ফেলা হতো তাতে সুবিচার হতো।
 
এসব সাক্ষ্য-প্রমাণে মৃত্যুদণ্ড হওয়া দূরের কথা, এসব অভিযোগ দাখিলের জন্য প্রসিকিউশনের জরিমানা হওয়ার দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসএ/বিএ/পিআর